‘১৭০ টাকা মজুরি অতি কষ্টে নিতে হচ্ছে’
চা শ্রমিক আন্দোলনের নেতা কৃষ্ণ দাস বলেছেন, চা শ্রমিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া ১৭০ টাকা মজুরি মন থেকে মেনে নিতে না পারলেও অতি কষ্টে মেনে নিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংসদের ৩১তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন তিনি।
‘গুলিবিদ্ধ গান একদিন ঠিকই কেড়ে নিবে স্বৈরাচারের প্রাণ’-স্লোগানকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন ছবি চত্বরে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মজুরি বৃদ্ধির যৌক্তিক আন্দোলনে যুক্ত চা শ্রমিক কৃষ্ণ দাস ও সত্যজিৎ ওরাঙ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ৩০০ টাকা মজুরির দাবি ছিল। কিন্তু আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারিনি। আমরা ভালো রেজাল্টের আশায় ব্যাপারটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে ন্যস্ত করেছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মালিক পক্ষের কথার ওপরে আমাদের ১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ১৬৮ বছর হলেও আমরা এখনো ভূমির অধিকার পাইনি। জানি না কবে এসব অধিকার ও নাগরিক সুযোগ সুবিধা পাব। রাষ্ট্র যেমন আমাদের মৌলিক অধিকার দেয় না, তেমনি মালিকরাও দিচ্ছে না। কাগজে কলমে মালিকপক্ষ আমাদের শিক্ষা, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিয়ে চুক্তি করলেও বাস্তবে তার কোনো বালাই নেই।
লিখিত বক্তব্যে সম্মেলনের আহ্বায়ক অমর্ত্য রায় বলেন, ‘দেশব্যাপী পুলিশি হামলা-মামলার ভয়ানকচিত্র আমাদের সামনে প্রতিনিয়ত উঠে আসছে। বর্তমানে একটি পুলিশি রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। আর এই দমন পীড়নের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এসব অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে শিক্ষার্থীদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও নবীনদের জন্য ভয়ভীতি ও র্যাগিংমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হয়নি। এখনো নির্যাতন-নিপীড়নের বিচার করতে গিয়ে কালক্ষেপণ ও পক্ষপাতদুষ্টতার উদাহরণ আমরা দেখতে পাই। র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে প্রশাসন ঘোষিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি শুধু কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ।
এসময় তিনি ক্লাসরুম সংকট নিরসন, জাকসুসহ সকল পর্ষদ নির্বাচন ও একাডেমিক মাস্টারপ্লান প্রণয়নসহ ২৫ দফা দাবি পেশ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে জাবি সংসদের সভাপতি রাকিবুল হক রনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মৌলবাদীদের উত্থানের পেছনে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা কাজ করছে। ডিজিটাল সিকিউরটি অ্যাক্টের অপব্যবহার করে বাংলাদেশের একজন লেখককে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। শিক্ষক, সাংবাদিক, ছাত্র কেউ তা থেকে মুক্তি পায়নি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ডিজিটাল অ্যাক্টের মতো ২০১৮ সালে ৫(ঞ) এবং ৫(খ) নামে দুটি আইনের ধারা সংযোজন করে তা দিয়ে সাংবাদিকদের ঘায়েল করা হয়েছে। কিছুদিন আগেও জাবিতে কর্মরত সাংবাদিককে নির্যাতন হয়েছে। মূলত বর্তমান সরকার ব্যবস্থার যে নীতি, জাবি তার ব্যতিক্রম নয়।’
উল্লেখ্য, আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় থাকবে ব্যান্ডদল কাকতাল ও সহজিয়া।