৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ৩ অপহরণকারীকে আটক, ভিকটিম উদ্ধার
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তিন অপহরণকারীকে আটক, একটি মোটরসাইকেল ও দুটি মোবাইলফোন জব্দ করেছে। আজ মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কোতোয়ালি থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম।
আটক হওয়া অপহরণকারীরা হলেন মো. হারুন অর রশিদ ওরফে হারুন (২৬), মো. মোফাজ্জল হোসেন ওরফে শিমুল (৩২) ও মোছা. সাকিরা আক্তার পুতুল ওরফে কাজল (২৭)।
ওসি জানান, আটক হওয়া ব্যক্তিরা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপশহরের পাকা রাস্তার কাছ থেকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মো. মোবারক হোসেন (৪৭) নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করেন। এ সময় তাঁরা তাঁকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিয়ে একটি লাল-কালো রঙের ১৩৫ সিসি মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যান।
এই অপহরণের সঙ্গে মো. হারুন অর রশিদ ওরফে হারুন, মোফাজ্জল হোসেন ও সাকিরা আক্তার পুতুল ওরফে কাজল, তরিকুল ইসলামসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও তিন-চার জন যুক্ত ছিলেন। পরে তাঁরা তাঁকে ৮নং উপশহরের মৌসুমি বেগমের বাসার দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখেন।
সেখানে আসামিরা খুনের ভয় দেখিয়ে মোবারক হোসেনের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ ছাড়া তাঁরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও ধারণ করে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখান।
পরবর্তী সময়ে মোবারক হোসেন নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য তাঁর স্ত্রী মোছা. নাজমা পারভিনের মাধ্যমে বিকাশে ২০ হাজার টাকা এবং ২০ ফেব্রুয়ারি বেলা অনুমান সাড়ে ১২টায় সুকৌশলে ভিকটিমের ম্যানেজার মহুরুল হকের মাধ্যমে আরও দুই লাখ টাকা নেন।
ওই দিনই সন্ধ্যায় ভিকটিম মোবারক হোসেনের স্ত্রী নাজমা ৯৯৯-এ ফোন করে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানাকে বিষয়টি অবহিত করেন। এর পর পরই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত অনুসন্ধান শুরু করে।
পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ মো. জিন্নাহ আল মামুনের নেতৃত্বে কোতোয়ালি থানার ওসি মো. তানভিরুল ইসলাম, উপপরিদর্শক (এসআই, নিরস্ত্র) রেজওয়ানুল করিমসহ থানার বাছাই করা চৌকশ একটি দল অভিযানে নামে।
অভিযানে তাঁরা দিনাজপুর শহরের ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় চিরুনি অভিযান পরিচালনা করেন। পুলিশের চৌকশ দলটি তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে, আসামিরা শহরের ৮নং উপশহর এলাকায় ভিকটিমসহ আত্মগোপন করে আছেন।
পরে আসামিদের অবস্থান চিহ্নিত করে মৌসুমি বেগমের বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এ সময় অপহরণকাজে ব্যবহৃত একটি বাজাজ ডিসকভার ১৩৫ সিসি মোটরসাইকেল ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
মো. তরিকুল ইসলামই (২৭) এই অপহরণ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানায় পুলিশ। তিনি পালিয়ে গেছেন বলেও জানায় পুলিশ।