আইনজীবীদের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান বিচারপতি
বিচার বিভাগের সারা দেশে যে ৩০ লাখের অধিক মামলা রয়েছে, তা নিষ্পত্তি করতে আইনজীবীদের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি বলেছেন, সিরাজগঞ্জে ২৬ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যা আশানুরূপ নয়, আগামী ছয় মাসের মধ্যে জেলার পুরাতন মামলার ৫০ শতাংশ নিষ্পত্তি করতে হবে।
আজ সোমবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে স্থানীয় বিচার বিভাগ আয়োজিত জুডিশিয়াল কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, বিচারকাজের দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হচ্ছে কারণ সময়মতো স্বাক্ষীরা আদালতে হাজির হন না। স্বাক্ষীদের সময়মতো হাজির করতে তিনি জেলার সব থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, মামলা নিষ্পত্তিতে বড় বাধা হলো ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। লাশ কাটা ঘরে ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞরা যান না। ডোম লাশ কেটে যা বলেন, ডাক্তাররা তাতেই সই করে দেন। ফলে সেই প্রতিবেদনের সঙ্গে পুলিশের তদন্তের মিল থাকে না। যে কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন হচ্ছে।
জেলা ও দায়রা জজ জাফরোল হাছানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন, জেলা বারের সভাপতি নুরুল আমিন। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নজরুল ইসলামের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগের রেজিস্ট্রার সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা সিভিল সার্জন দেবব্রত রায়, জেলায় কর্মরত বিচারক, অতিরিক্ত বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আরো বলেন, জেলায় দুই পালায় বিচারকরা দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বিচারকাজ তরান্বিত হচ্ছে না। বিচারকদের চেষ্টা থাকলেও স্বাক্ষী ও আইনজীবীদের অনুপস্থিতির কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিচারকাজ করতে যেসব সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন হবে তা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় নারীদের জন্য আদালত প্রাঙ্গণে বিশ্রামাগারসহ গণশৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বিচারকসহ সবাইকে একযোগে কাজ করে বিচারকাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার আহ্বান জানান।
এদিকে অন্য বক্তারা বলেন, সিরাজগঞ্জ আদালতে ছয়টি মূল এজলাস, পাঁচটি অস্থায়ী এজলাসে মামলা পরিচালনা করা হচ্ছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। একই সঙ্গে গত জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এক হাজার ৫৩০টি মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে জেলায় ৩১ জুলাই পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই হাজার ১৫টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এসব মামলায় ৫১০ জনকে কারাদণ্ড এবং ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।