‘ক্যানসারের মতো ভয়ঙ্কর রোগের জন্য প্লাস্টিক সামগ্রী দায়ী’
পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ‘পেটের পীড়া, হরমোনের সমস্যা, লিভারের সমস্যা, এমন কি অনেক ক্ষেত্রে ক্যানসারের মতো ভয়ঙ্কর রোগের জন্য দায়ী প্লাস্টিক সামগ্রী।’
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন পরিবেশমন্ত্রী। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ওই আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার শুধু যে পরিবেশের ক্ষতি করছে তা নয়। এটি মানব দেহের জন্যও ব্যাপক ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আইসক্রিম কাপ, সিরাপের বোতল, পানির বোতল, খাবারের কন্টেনার এসব প্লাস্টিকের তৈরি নিত্য ব্যবহার্য জিনিসগুলো কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত তা আমরা বলতে পারি না।’
পরিবেশ রক্ষায় অধিক হারে জনসচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম যেমন চলমান রয়েছে তেমনি পরিবেশ সম্মতভাবে উন্নয়ন করাও আমাদের লক্ষ্য।’
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা তৈরির জন্য পরিবেশ দিবস পালন করা হয়। পরিবেশের বিষয়টা স্থানীয় ব্যাপার নয়, এ সমস্যাটি বৈশ্বিক। তাই প্রত্যেক দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রতিবছর ৫ জুন বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি পালন করা হয়।’
এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে মন্ত্রী বলেন, ‘এবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আন্তর্জাতিক পরিবেশ কর্মসূচি যে স্লোগানটি বেছে নিয়েছে সেটির ভাবানুবাদ করা হয়েছে “আসুন প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি।” এ স্লোগান যখন ঠিক করা হলো তখন নিশ্চয়ই আমরা বুঝতে পারি যে, প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা তৈরির প্রয়েজনীয়তা আসলেই দেখা দিয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া দেশে পলিইথিলিন বা পলিপ্রপাইলিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশে পরিবহন ও ব্যবহার বন্ধ করেছে। তবে পরবর্তী সময়ে পলি প্যাকেজিংয়ের বিকল্প না থাকায় প্যাকেজিং বা মোড়ক তৈরি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল। এ কারণে পলি প্যাকেজিংয়ের সুযোগে পলিইথিলিন বা পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ আবার দৃশ্যমান হয়েছে। বর্তমানে দেশে পাট থেকে প্রাপ্ত সেলুলোজ প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে জৈব পচনশীল পলিব্যাগ ও মোড়ক প্রস্তুত করা সম্ভব হয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশে উদ্ভাবিত জৈব পচনশীল পলিব্যাগ ও মোড়ক আর্ন্তজাতিক বাজারে ক্রমশ সহজলভ্য হওয়ায় সরকার এ ধরনের বায়ো-ব্যাগ ও বায়ো-প্যাকেজিং শিল্পকে উৎসাহ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’
অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য দেন আইইউসিএন এর চেয়ারপারসন হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ, কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ রাকিবুল আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুর রব মোল্লা, উন্নয়র অন্বেষার প্রধান নির্বাহী রাশেদ আল মাহমুদ তীতুমীর, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রমুখ।