সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি, ‘ব্যুরোক্রেসি তুই কবে যাবি’

অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন করে মর্যাদা সমুন্নত রাখাসহ ছয় দফা দাবি আদায়ে প্রস্তুতি চলছিল কয়েক মাস ধরে। সেই দাবি আদায়ে খুলনার হাদিস পার্কে ডাকা হয়েছিল পেশাজীবীদের মহাসমাবেশ।
সেই সমাবেশে যোগ দিতে গতকাল রোববার রাত থেকে খুলনায় আসতে থাকেন উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত ১৬ দপ্তরের কর্মকর্তারা। তবে আজ সকাল থেকে দলে দলে যোগ দিতে থাকেন তাঁরা। খুলনা বিভাগের সব জেলা, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মকর্তারা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। কানায় কানায় ভরে যায় পুরো হাদিস পার্ক। তা পরিণত হয় মহাসমাবেশে।
বিসিএস সমন্বয় কমিটি (২৬ ক্যাডার), নন ক্যাডার ও ফাংশনাল সার্ভিসের উদ্যোগে মহাসমাবেশ শুরু হয় বেলা ১১টায়। চলে বেলা ৩টা পর্যন্ত। তাঁদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল, বেতন ভাতায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর বাতিল, কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন, পদোন্নতির ক্ষেত্রে সবার সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়া ও উপজেলা থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সমান পদমর্যাদা প্রতিষ্ঠা।
এই সব দাবি আদায় নিয়ে মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ডা. বাহারুল আলম। মহাসমাবেশে ডা. বাহারুল আলম ঘোষণা দেন, আগামী ২৪ অক্টোবর বেতন বিলে কোনো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর নেওয়া হবে না। আগামী ২১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে আগামীতে ঢাকায় মহাসমাবেশ করা হবে। সেই মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মহাসমাবেশের সভাপতি ডা. বাহারুল আলম এখন থেকে নতুন স্লোগান ঘোষণা করেন যে, ‘এক দফা এক দাবি, ব্যুরোক্রেসি তুই কবে যাবি’। তিনি বলেন, ‘আমরা সিপাহসালাররা নীরবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারি। আবার এই আমলারা কিন্তু রুখে নিয়ে যেতে পারে।’ এ জন্য তিনি ছয় দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।urgentPhoto
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাসরিন বেগম, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বিসিএস সমন্বয় কমিটির (২৬ ক্যাডার) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কৃষিবিদ এস তাসাদ্দেক আহমেদ, কৃষিবিদ ক্যাডার সমিতির মহাসচিব ড. অরুণ কান্তি মণ্ডল, খুলনা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. মেহেদী নেওয়াজ, শিক্ষা ক্যাডারের এস এম তৌহিদুজ্জামান, বি এম হাফিজুর রহমান, মো. শামীম হোসেন, মামুন কাদের, কুয়েটের প্রকৌশলী ড. সোবহান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিদ ড. এম এ মান্নান, কৃষিবিদ ড. বশির আহমেদ, খুলনা মেডিকেলের উপাধ্যক্ষ ডা. এস কে বল্লভ, ডা. মাহফুজুর রহমান, ডা. আবুল বাসার, ডা. আনোয়ার শাদাত, ডা. সাফাযয়ত, ডা. সাইফুল ইসলাম, ডা. মোসতাক আহমেদ, নড়াইলের ডা. আবদুল কাদের, মাদারীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মামুন বিশ্বাস, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মো. মনিরুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদ পরিষদের মোখলেসুর রহমান মনা, ফাংশনাল সার্ভিসের কেন্দ্রীয় কর্মচারী সমিতির হারুন-অর-রশীদ প্রমুখ। সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া, গোপালগঞ্জ ও খুলনাসহ সব জেলার কৃষিবিদ, প্রকৌশলী, চিকিৎসক ও সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ক্যাডার ও নন-ক্যাডার ও ফাংশনাল সার্ভিসের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা সমাবেশে অংশ নেন।
পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন বিসিএস সমন্বয় কমিটির (২৬ ক্যাডার) খুলনা জেলা শাখার সদস্য সচিব ও যুগ্ম-সচিব যথাক্রমে অধ্যাপক ফারুক-ই-আজম ও কৃষিবিদ ড. এ বি এম জাকির হোসেন।