পানি বিধি চূড়ান্ত করতে মতবিনিময় কর্মশালা

পানি বিধি চূড়ান্ত করতে খুলনার সার্কিট হাউসে হয়ে গেল মতবিনিময় কর্মশালা। অনুষ্ঠানে বক্তারা পানি বিধিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য সুপেয় পানির সহজপ্রাপ্যতা, ভূগর্ভস্থ পানির অবনমন, লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা বিষয়ে বক্তব্য দেন।
গত ২১ অক্টোবর ওই কর্মশালার আয়োজন করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আ ল ম আবদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার (ওয়ারপো) মহাপরিচালক সাইফুল আলম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী কে এম আনোয়ার হোসেন, ইনস্টিটিউশনালাইজেশন অব ইন্টেগরেটেড ওয়াটার রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্রসেস ইন কমপ্লায়েন্স উইথ বাংলাদেশ ওয়াটার অ্যাক্টস ২০১৩ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম। সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা কামাল।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী রেজাউল করিম। কর্মশালাটির গ্রুপ ওয়ার্ক ও উন্মুক্ত আলোচনা পর্বটি পরিচালনা করেন ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (আইবিএস) পিএইচডি গবেষক মো. রাজ্জাকুল ইসলাম।
কর্মশালায় উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন খুলনা ওয়াসার ডিএমডি, খুলনা জেলার বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ খুলনা জেলার পানি খাতের সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়নকারী সংস্থার কর্মকর্তা/প্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থা রূপান্তরের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ প্রমুখ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবহমানকাল থেকে নদীমাতৃক বাংলাদেশের মানুষের জীবন, জীবিকা ও সংস্কৃতি গড়নের অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে পানি। সময়ের পরিক্রমায় এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই পানির ব্যবহার ও উত্তোলন মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ভূগর্ভস্থ পানির অতিমাত্রায় ও ক্ষেত্রবিশেষে নির্বিচার উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে যা পানি সম্পদের টেকসই ব্যবহারের জন্য হুমকিস্বরূপ। ভূ-উপরিস্থ পানিসম্পদকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে না পারায় প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ ব্যবহারোপযোগী পানি সমুদ্রগর্ভে চলে যাচ্ছে। জাতীয়ভাবে পানিসম্পদের সমন্বিত উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, আহরণ, বিতরণ, ব্যবহার, সুরক্ষা ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে সরকার ২০১৩ সালে বাংলাদেশ পানি আইন প্রণয়ন ও কার্যকর করেছে। পানি আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাতীয় পানিসম্পদ পরিষদের নির্বাহী কমিটিকে। এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দিচ্ছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পানি আইন মূলত একটি কাঠামোগত আইন যাতে সাতটি অধ্যায়ে ৪৭টি ধারা রয়েছে। এ আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ ও কার্যকর করতে কমপক্ষে ১৬টি ধারার বিপরীতে বিধি প্রণয়ন করা প্রয়োজন। পানি আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পানি ওয়ারপো জাতীয় পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন ও আইনটির আলোকে বিধি প্রণয়নের উদ্দেশ্যে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পানি আইনের আলোকে একটি কার্যকর বিধি প্রণয়নের জন্য দেশব্যাপী সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কার্যক্রম চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় উপকূলীয় অঞ্চলে পানিসম্পদের বিদ্যমান অবস্থা, সমস্যা, সম্ভাবনা ও টেকসই ব্যবহার সম্পর্কে অবহিতকরণের লক্ষ্যে খুলনা জেলার সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের তাঁরা পানি বিধিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য সুপেয় পানির সহজপ্রাপ্যতা, ভূগর্ভস্থ পানির অবনমন, লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা বিষয়ে মূল্যবান মতামত দেন।