চুক্তি বাস্তবায়ন ছাড়া পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়
বান্দরবানে নানা আয়োজনে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদনকারী আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বান্দরবানে মধ্যমপাড়ায় সংগঠনের কার্যালয় চত্বরে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতার ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জেএসএস জেলা সভাপতি সাধুরাম ত্রিপুরা মিল্টন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিকৃতিতে প্রথমে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এ ছাড়া পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), জনসংহতি সমিতি হিল ইউমেন্স ফেডারেশনসহ পাহাড়িদের অধিকার আদায়ের সংগঠনগুলো পর্যায়ক্রমে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। পরে কার্যালয় থেকে একটি শোক র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
পরে দলীয় কার্যালয়ে জেএসএস সভাপতি সাধুরাম ত্রিপুরা মিল্টনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়। সেখানে অন্যদের মধ্যে জেএসএস কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা জলিমং মারমা, জেলা সাধারণ সম্পাদক উছোমং মারমা, নোয়াপতং ইউপি চেয়ারম্যান শম্ভু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা নিত্যলাল চাকমাসহ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বক্তব্য দেন।
সভায় বক্তারা বলেন, পাহাড়ের অবিসংবাদিত নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার রক্ত কখনো বৃথা যেতে দেব না। পাহাড়িদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে পার্বত্য চুক্তি শতভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে। চুক্তির বাস্তবায়ন ছাড়া পার্বত্যাঞ্চলে কোনো দিন স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এমএন লারমার স্বপ্ন বাস্তবায়নে অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করা হবে।
১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলার ভগবান টিলা এলাকায় একদল বিভেদপন্থীর হাতে আট সহযোদ্ধাসহ নিহত হন এমএন লারমা। এমএন লারমা ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত প্রথম সংসদ সদস্য। বাংলাদেশের সংবিধানে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে জাতীয় সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেছিলেন এমএন লারমা। এরপর ১৯৭২ সালের ৭ মার্চ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁর নেতৃত্বে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। পরে ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ির ইটছড়িতে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সংগঠন ‘শান্তি বাহিনী’। যার পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে।