বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে পাটশিল্প ধ্বংস হয়েছে : প্রতিমন্ত্রী
বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেশের পাটশিল্পকে ধ্বংস করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম।
আজ রোববার দুপুরে সাভারের নামা বাজার এলাকায় চালের আড়তে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন বাস্তবায়ন সংক্রান্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, সরকার এ ক্ষেত্রে শতভাগ সাফল্যের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
urgentPhoto
পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সরকার বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পাটশিল্পকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিশ্বের সর্ববৃহৎ জুটমিল আদমজী বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশ তিন লাখ বেল পাটজাত পণ্যের বাজার হারায়।’
পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন বাস্তবায়নে সরকার ‘একশ ভাগের ওপরে আরো পঞ্চাশ ভাগ’ সফল হবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।
এমন ‘উদ্ভট’ তত্ত্বের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মির্জা আজম হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমরা ছয়টি পণ্যকে বাধ্যতামূলক মোড়কজাত করার কথা বলেছি। ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি। কিন্তু আপনারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন দোকানে দোকানে গিয়ে লক্ষ করে দেখেন, এরই মধ্যে ছয়টি পণ্যের বাইরে আদা, রসুন, ছোলা, পেঁয়াজ এগুলোর ক্ষেত্রেও কিন্তু মানুষ স্বেচ্ছায় প্লাস্টিক ব্যাগ বর্জন করে পাটের ব্যাগ ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে।’
‘মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে একটি আইন, যার এক ভাগও বাস্তবায়ন ছিল না, সেটির প্রায় শতভাগ বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। জোর করে, জেল দিয়ে, জরিমানা করে এই আইন বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না।’
তবে যারা আইন মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, অভিযান শুরু করে বন্ধ করে দিলে হবে না। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে পণ্যে পাটজাত মোড়ক বাধ্যতামূলক করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশকে আবারও সোনালি আঁশের দেশ হিসেবে পরিচিত করতে কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। ফলে পাটশিল্পের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা এখন রিকশা চালান। এসব শ্রমিককে আবার ফিরিয়ে এনে সরকার বন্ধ পাটকলগুলো চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেনসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।