মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা বিনা পয়সায়
অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দেশের যে কোনো হাসপাতালে ওষুধপত্রসহ তাঁদের বিনা পয়সায় সম্পূর্ণ চিকিৎসা রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। এ ছাড়া ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে বছরে দুটি করে বোনাস পাবেন মুক্তিযোদ্ধারা। ১০ হাজার টাকা করে তাঁরা মাসিক ভাতা পাবেন।
আজ শুক্রবার রাঙামাটিতে এক সরকারি সফরকালে অনুষ্ঠিত সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এসব কথা বলেন।
বেলা ১১টায় রাঙামাটি শহরের তবলছড়িতে এক কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
এ সময় রাঙামাটির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার, জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা ইউনিট কমান্ডার রবার্ট রোনাল্ড পিন্টুসহ রাজনৈতিক নেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মন্ত্রী।
জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মন্ত্রীর সফরসঙ্গী এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, মৃত্যুবরণ করা সব মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার পাশাপাশি একই ডিজাইনে তাদের কবর রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্মাণ করে দেওয়া হবে- যা দেখে যাতে সবাই বুঝতে পারবেন এটা মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থল। অন্য ধর্মাবলম্বী মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হলেও তাদের নিজ নিজ ধর্ম ও সংস্কৃতির আদলে একই সমাধিস্থল নির্মাণ করে দেবে রাষ্ট্র। এ ছাড়া যে কোনো সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা নিশ্চিত করা হবে। পাঠ্যসূচিতে ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও প্রকৃত তথ্যসংবলিত কাহিনীসহ যুদ্ধাপরাধীদের কর্মকাণ্ড ও ঘটনাবলি সম্পর্কিত সঠিক তথ্য লিপিবদ্ধ করা হবে। আগামী জুলাই থেকে এসব সরকারি উদ্যোগ কার্যকর হবে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব বিষয় বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, সম্প্রতি বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নিয়ে এবং এ দেশীয় দোসরদের সহায়তায় পাকিস্তানি হায়েনাদের গণহত্যা, লুণ্ঠন, মা-বোনদের ইজ্জত হরণ, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে যে মিথ্যাচার করেছেন তা প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে তাঁকে। তা হবে তাঁর বুদ্ধিমানের কাজ। অন্যথায় জাতি কখনো ক্ষমা করবে না তাঁকে।
মতবিনিময় সভা শেষে নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে নির্মিত বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মুন্সী আবদুর রউফের সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন মন্ত্রী মোজাম্মেল হক।