সাবেক মেয়র খোকার দুর্নীতি তদন্তের তাগিদ
ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এখন তদন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
অন্য একটি দুর্নীতি মামলায় ১৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক বিএনপির এই নেতাকে দেশে এনে আদালতের রায় কার্যকরেরও সুপারিশ করেছে এ-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
জাতীয় সংসদ ভবনে আজ রোববার দুপুরে অনুষ্ঠিত কমিটির ১১তম বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। কমিটির সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলী, ফজলে হোসেন বাদশা ও রহিমা আকতার অংশ নেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বলেন, সাবেক মেয়র খোকার দুর্নীতি তদন্তে সংসদীয় সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। বৈঠকে ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র খোকার দায়িত্ব পালনকালে সংঘটিত অনিয়ম-সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আইন বিশেষজ্ঞ দিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য রহিমা আকতার বলেন, প্রয়োজনে পলাতক এই আসামিকে বিশেষ ব্যবস্থায় দেশে আনার জন্য তাগিদ দেয় সংসদীয় কমিটি।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে গত বছরের অক্টোবরে সাদেক হোসেন খোকাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। তবে সাদেক হোসেন খোকা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় তাঁকে পলাতক দেখিয়ে এই বিচার হয়েছে। তবে বিএনপি অভিযোগ করেছে, সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই মামলা এগিয়ে নিয়েছে।
জানা যায়, এ সংসদ ছাড়াও বিগত নবম সংসদেও সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি তদন্তে সংসদীয় সাব-কমিটি গঠন করা হয়। সংসদীয় সাব-কমিটি দুর্নীতি তদন্তের জন্য মেয়র থাকাকালীন তাঁর কাছে নগর ভবনে একটি কার্যালয় চাইলেও তিনি দেননি। এ ছাড়া খোকার বিরুদ্ধে তদন্তে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনেও বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে সংসদীয় কমিটি।
এদিকে জাতীয় সংসদ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কমিটি ‘আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’-এর আওতায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ আরো পাঁচটি সিটি করপোরেশনে আনার সুপারিশ করে। এগুলো হলো চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা ও সিলেট।
তা ছাড়া গুড গভর্নেন্সের লক্ষ্যে হোল্ডিং ট্যাক্স বকেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান ট্যাক্স আদায়েরও সুপারিশ করে।
বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আগের নিয়োগকৃত আইন কর্মকর্তা পরিবর্তন করে নতুন আইন কর্মকর্তা নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।
কমিটি ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘পলিউশান কন্ট্রোল মেজারস অব গুলশান-বারিধারা লেক বাই ডাইভার্টিং দ্য ড্রেনেজ আউটলেটস’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থের ব্যবহারের তথ্য পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা