জলকেলিতে বিদেশিরাও
বান্দরবানে মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব সাংগ্রাইকে ঘিরে জলকেলি উৎসবে মেতেছেন তরুণ-তরুণীরা। আজ শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় রাজার মাঠে জলকেলি বা মৈত্রী পানিবর্ষণ খেলায় নতুন মাত্রা যোগ করেছিল বিদেশি পর্যটকদের অংশগ্রহণ। নারী-পুরুষ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বিদেশি পর্যটকরাও আনুষ্ঠানিকভাবে জলকেলিতে মেতে ওঠেন সাংগ্রাই উৎসবে।
জলকেলি উৎসবের আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে পানিখেলায় (মৈত্রী পানিবর্ষণ) বিবাহিতরা অংশ নিতে পারেন না। মারমা তরুণ-তরুণীরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে ভাবের আদান-প্রদান করেন। এই উৎসবের মাধ্যমে পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা সম্পর্কের সেতুবন্ধ তৈরি করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, উৎসব কোনো জাতিগোষ্ঠী এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। উৎসব-আনন্দ সবার। সম্প্রীতির উৎসবে পাহাড়ি-বাঙালি সবাই একাকার হয়ে যায়।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষ্মীপদ দাশসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
এদিকে জলকেলি উৎসবে ছোট-বড় কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পানিখেলায় অংশ নেন তরুণ-তরুণীরা। শত শত পাহাড়ি নারী-পুরুষ এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ভিড় জমায় জলকেলি উৎসব দেখতে। পুরোনো বর্ষকে বিদায় আর নতুন বর্ষকে বরণ করার এই উৎসবকে মারমা সম্প্রদায় প্রধান সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই নামে পালন করে আসছে যুগ যুগ ধরে। এদিকে সাংগ্রাই উৎসবকে ঘিরে রাজারমাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নাচে-গানে মাতিয়ে তুলেছেন মারমা তরুণ-তরুণীরা। মারমা শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুগ্ধ দর্শকরাও।
সংগ্রাই আয়োজক কমিটির সভাপতি মংচিংনু মারমা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে দুদিনব্যাপী রাজগুরু ক্যায়াংয়ে হাজারো প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচি চলছে। আর উজানীপাড়া, মধ্যমপাড়া, জাদীপাড়াসহ বিভিন্ন পাহাড়ি পল্লীতে রাতব্যাপী তরুণ-তরুণীরা হরেক রকমের পিঠা তৈরির প্রতিযোগিতায় মেতেছে। এসব পিঠা পাড়া-প্রতিবেশীদের ঘরে ঘরে বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া শনিবারও রাজার মাঠে জলকেলি বা মৈত্রী পানিবর্ষণ পানিখেলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।