কারারক্ষী হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের কারারক্ষী খুনের ঘটনায় হিমেল মাহমুদ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি। গতকাল সোমবার রাতে কাশিমপুর কারাগারের পাশে দেউলিয়া বাড়ি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হাসান রেজা জানান, গতকাল খুনের ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে রাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিমেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে হত্যার ঘটনায় গতকাল সোমবার মধ্যরাতে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো চারজনকে আসামি করে গাজীপুর থানায় মামলা করেন নিহত রুস্তম আলীর স্ত্রী নাসরিন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, কোনাবাড়ি এলাকায় নিহত রুস্তম আলীর ভাই শাহ আলম বসবাস করেন। সম্প্রতি শাহ আলমের মেয়েকে হিমেল নামের এক যুবক উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এই উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করেন রুস্তম আলী। আর এ ঘটনার জেরেই এ হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার সকালে কাশিমপুর এলাকায় নিহত রুস্তম আলীর বাসায় গেলে এনটিভিকে নিহতের স্ত্রী নাসরিন আক্তার জানান, তাঁদের একটি মেয়ে আছে। নাম নাহিদা আক্তার রুম্পা। রুস্তম আলী দম্পতির কোনো সন্তান নেই, এমন খবর প্রচারের কারণে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে তাঁরা দাবি করেন।
রুস্তম আলীর মেয়ে রুম্পা এনটিভি অনলাইনকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি তাঁর মেয়ে। আমার জন্ম হয়েছে খুলনায়। কেন আমাকে পালিত বলা হলো। মামলাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য এটা পরিকল্পিত প্রচারণা।’ এর মধ্যে হত্যাকারীদের স্বার্থ জড়িত বলে মন্তব্য করেন রুম্পা।
গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগারের ফটক থেকে মাত্র ২৫০ গজ দূরে রুস্তমকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ডেঙ্গা মার্কেটের আহমদ মেডিকেল কর্নার নামের একটি ওষুধের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। রুস্তম ওই দোকান থেকে ওষুধ কিনছিলেন। তিন যুবক একটি মোটরসাইকেলে করে সেখানে আসে। একজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রুস্তমকে লক্ষ্য করে পরপর কয়েকটি গুলি ছোড়ে। পরে ওই যুবকরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
এ সময় রুস্তম আলী বুকে, গালে ও ডান হাতে গুলিবিদ্ধ হন। এতে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান তিনি। এ ঘটনায় আহমেদ মেডিসিন কর্নারের মালিক সাইফুল ইসলাম, রুস্তমের ছোট ভাই শাহ আলম ও মেয়ের স্বামী সোহেল রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনা তদন্তে কারা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে দুটি কমিটি গঠন করা হয়।