‘মীর কাসেম স্বাভাবিক আছেন, ছেলেকে না পাওয়ায় দুঃখ’
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হয়ে গেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ছয়টি গাড়িতে করে আনুমানিক ৪৫ জন সদস্য কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, দেখা করার অনুমতি যান পরিবারের ৩৮ সদস্য।
কারাগার থেকে বের হওয়ার পথে মীর কাসেমের স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, উনি (মীর কাসেম আলী) মৃত্যুকে ভয় পান না। তাঁর মৃত্যু হবে শহিদের মৃত্যু। মীর কাসেম আলী স্বাভাবিক আছেন বলেও জানান তাঁর স্ত্রী। তিনি বলেন, সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো শেষ মুহূর্তে ইচ্ছা অনুযায়ী ছেলেকে কাছে পাননি তিনি। তবে তাঁর নিখোঁজ ছেলে একদিন ফিরে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন মীর কাসেম আলী।
যারা মিথ্যা মামলা দিয়ে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুর মুখোমুখি করেছেন তারা কখনো জয়ী হবে না মন্তব্য করে আয়েশা খাতুন আরো বলেন, ‘তিনি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত আছেন। এ দেশে একদিন ইসলামের জয় হবেই।’
স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন ছাড়াও মীর কাসেমের সঙ্গে দেখা করতে যান দুই মেয়ে তাহেরা তাসমিন, ফাহমিনা আক্তার, দুই ছেলের বৌ শাহেদা ফাহমিদা, সুমাইয়া রাবেয়া, নাতি-নাতনিসহ অন্যরা।
প্রায় তিন ঘণ্টা কারাগারের ভেতরে অবস্থানের পর আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কারাগারের প্রধান ফটক দিয়ে বের হয়ে আসে মীর কাসেমের পরিবারের সদস্যদের বহনকারী ছয়টি গাড়ি।
এর আগে কারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী আজ বিকেলে মীর কাসেমের সঙ্গে দেখা করতে আসেন পরিবারের সদস্যরা।
প্রাণভিক্ষা না চাওয়ায় যেকোনো সময় ফাঁসি কার্যকর হতে পারে মীর কাসেমের। রায় কার্যকরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী আদেশও আজ দুপুরে কারাগারে পৌঁছেছে। তবে এখন পর্যন্ত রায় কার্যকরের সময় সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
অবশ্য আজ সকাল থেকেই কারাগারের আশপাশে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা। আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল রোববার ভোর ৬টা পর্যন্ত কাশিমপুর কারাগারে জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। নেওয়া হয়েছে ছয় স্তরের নিরাপত্তাবলয়। মোতায়েন হয়েছেন ছয় প্লাটুর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য।
গত ৬ আগস্ট মীর কাসেম আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁর ছেলে মীর আহমেদ বিন কাসেম। তবে এর কয়েকদিন পরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেমকে ‘তুলে নিয়ে যাওয়া হয়’ বলে অভিযোগ করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।