প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ, নিরাপত্তা জোরদার

দেশের ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায়।
এ জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। এরই মধ্যে মাঠে শামিয়ানা টানানো, মাইক, ফ্যান, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ছাড়া ঈদগাহ ময়দান ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ৯০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। ৮৫ হাজার পুরুষ ও পাঁচ হাজার নারীর নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহের জামাতে অংশ নেবেন রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিচারপতি, কূটনীতিক, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পেয়ারু অ্যান্ড সন্স। দুই লাখ ৬০ হাজার বর্গফুটের জাতীয় ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে শামিয়ানা টাঙানো শেষ হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজও শেষ। কয়েকশ বৈদ্যুতিক পাখা লাগানো হয়েছে। সাজসজ্জার কাজও শেষ। ঈদগাহ এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পুলিশ-র্যাবের দুটি আলাদা নিয়ন্ত্রণকক্ষও তৈরি করা হয়েছে। ময়দানের মূল ফটকের পাশেই বসানো হয়েছে ১২০টি অজুখানা।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে ঈদগাহে দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন ২০০-এর বেশি শ্রমিক। শুধু ঈদগাহ মাঠে বসানো হয়েছে ৬৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা। রাষ্ট্রপতিসহ বিশিষ্টজন ঈদের নামাজ পড়তে আসবেন হাইকোর্টের প্রধান ফটক দিয়ে। সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে ঈদগাহ ময়দানের প্রধান ফটক। প্রধান ফটকে নিরাপত্তা তল্লাশির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ৫০ হাজার বাঁশ দিয়ে বানানো হয়েছে ঈদগাহের মূল অবকাঠামো। এই অবকাঠামোকে বৃষ্টি প্রতিরোধী শামিয়ানা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ফলে বৃষ্টি এলেও মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে কোনো সমস্যা হবে না। জাতীয় ঈদগাহ মাঠের চারপাশে থাকা দেয়াল ও দেয়ালের ওপরে খাঁজকাটা লোহার কারুকাজ ঘষে লাগানো হচ্ছে নতুন রং। অজু করার জন্য পানির ট্যাপগুলোকে ঠিকঠাক করে লাগানো হয়েছে। শতাধিক মানুষ একসঙ্গে অজু করতে পারবেন সেখানে। পানিনিষ্কাশনের জন্য তৈরি করা হয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। মুসল্লিদের সুবিধার্থে ভ্রাম্যমাণ টয়লেটও থাকবে ঈদগাহ মাঠে। মাঠে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে যাবতীয় ইলেকট্রিক ওয়্যারিংয়ের কাজ শেষ করা হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পেয়ারু অ্যান্ড সন্সের কর্ণধার মোজাম্মেল হক গতকাল রোববার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সবাই অনেক আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পেরেছি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভিআইপিদের জন্য ঈদগাহের ভেতরে প্রায় তিন হাজার বর্গফুট জায়গা আলাদা নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে থাকবে। মাজারের রাস্তাটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বরাবরের মতো এবারও জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। এ ছাড়া বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি ঈদ জামাত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়। এরপর পর্যায়ক্রমে সকাল ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং পঞ্চম ও শেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উদ্যোগে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল ৮টা ও ৯টায় ঈদের দুটি জামাত হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রধান গেটসংলগ্ন মাঠ এবং শহীদুল্লাহ হল লনে সকাল ৮টায় আরো দুটি জামাত হবে। ধানমণ্ডির সোবহানবাগ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় জামাত অনুষ্ঠিত হবে।