অবিরাম বর্ষণে পাহাড় ধস, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি বান্দরবানে
অবিরাম বর্ষণে বান্দরবান-কেরাণীহাট সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে আবারও পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড় ধস ও জলাবদ্ধতায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এদিকে, পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কায় পাহাড়ের ঢালে বসবাসকারীদের ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
প্রশাসন ও স্থানীয়রা জানায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে বান্দরবান জেলার সাতটি উপজেলায় অবিরাম বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। আজ শনিবার (৫ আগস্ট) সকাল নয়টা পর্যন্ত ১৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সকালের পর থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম।
ইতোমধ্যে জেলার সাতটি উপজেলায় ১৯২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে লামায় আশ্রয় কেন্দ্রে ১৫টি পরিবার এবং রুমায় ১০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে পড়েছে বান্দরবান-কেরাণীহাট-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সড়ক, লামা-সূয়ালক সড়ক, রোয়াংছড়ি-রুমা অভ্যন্তরীণ সড়কের বিভিন্ন স্থানে। এছাড়াও জেলা সদরের লেমুঝিরি এলাকা, কালাঘাটা, বনরুপা পাড়া, ইসলামপুর, বালাঘাটা, হাফেজঘোনা এলাকায় বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বান্দরবানে সাঙ্গু নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। নদী তীরবর্তী লোকজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এদিকে বৃষ্টিতে বালাঘাটা সড়কের এমডিএস এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে সড়কটি হাঁটু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এবং পাহাড় ধসে ক্যাচিংঘাটা নতুন পাড়া, বনরুপা পাড়া সড়ক, হাফেজঘোনা বরিশাল পাড়া সড়কে মাটি জমে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এ প্রসঙ্গে সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা নারগিস সুলতানা বলেন, ‘পাহাড় ধসের সম্ভাব্য ঝুঁকিপুর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এলাকায় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।’
বান্দরবান পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সৌরভ দাশ শেখর জানান, বান্দরবান-কেরাণীহাট মহাসড়কসহ পৌর এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ধসে পড়া মাটি দ্রুত সড়ক থেকে সরিয়ে নিচ্ছে পৌরসভার কর্মচারীরা। সাঙ্গু নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় বালাঘাটা সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। প্রাণহানির শঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে এবং ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, ‘কয়েকদিনের বৃষ্টিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা বেড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলায় ১৯২টি আশ্রয় কেন্দ্রগুলো খোলা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের।’