মাত্র তিন দিন বয়সী শিশুকে চুরি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড থেকে। এ ঘটনায় একই পরিবারের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় শিশুটিকেও।

আজ রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মূল অভিযুক্ত নুসরাত, তার স্বামী নাজমুল হোসেন তুষার, শাশুড়ি নাহার বেগম ও ননদ নাদিরা ওরফে খুরশিদা।

মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, গত সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রাজমিস্ত্রী হিরোন মিয়া ও সাহানা বেগম দম্পতির পুত্র শিশুর জন্ম হয়। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হওয়ায় বুকের দুধ পান করাতে পারছিলেন না মা সাহানা। একই সময় পাশের ওয়ার্ডে ছিলেন নুসরাত নামে এক নারী।

আশরাফ হোসেন আরও জানান, নুসরাতের শিশু ঢামেক কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিল। এ সময় হিরোন মিয়া ও সাহানা বেগম দম্পতির নবজাতককে দুগ্ধ পান করাতে এগিয়ে আসেন নুসরাত। আর দুগ্ধ পান করানোর ফাঁকে গত বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) নিজের শিশুকে আইসিইউতে রেখে হিরোন ও সাহানা দম্পতির নবজাতক নিয়ে পালিয়ে যান নুসরাত।

মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, তিন দিন ধরে সাহানার নবজাতককে দুগ্ধ পান করিয়ে আসছিলেন নুসরাত। এই সময়ে তার শিশুটি আইসিইউতে ভর্তি। তার শিশুটির বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা না থাকায় তিনি হাসপাতাল থেকে নবজাতকটিকে চুরি করে নিয়ে যান। এরপর শিশুটিকে নিয়ে আজিমপুর এলাকায় স্বামী তুষারের হাতে তুলে দেন। এরপর ফের হাসপাতালের বেডে এসে শুয়ে থাকেন। আর তুষার শিশুটিকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়।

আশরাফ আরও বলেন, এই ঘটনার তথ্য পেয়ে শাহবাগ থানা পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখে—নুসরাত নবজাতকটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। পরবর্তীতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে স্বামী তুষার, শাশুড়ি নাহার বেগম ও ননদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, নুসরাতও সিজারের রোগী। তিনি অসুস্থ থাকায় থানা পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।