বিচারক সোহেল রানার সকালে সাজা, দুপুরে জামিন, বিকেলে সাজা স্থগিত
আদালত অবমাননার অপরাধে কুমিল্লার সাবেক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল রানাকে বেলা ১১টার দিকে সাজা দেওয়া হয়। পরে দুপুর দুইটার দিকে একই আদালত তাকে জামিন দেন। বিকেলে সাজার রায় স্থগিত করেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। আবার বিকেলে আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত এ সাজা স্থগিত করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে সাজা স্থগিত করে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
এর আগে দুপুরে আদালত অবমাননার অপরাধে কুমিল্লার সাবেক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল রানাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেওয়ার তিন ঘণ্টার মাথায় তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। সাজার বিরুদ্ধে আপিল করার শর্তে তাকে এক মাসের জামিন আদেশ দেন আদালত।
এর আগে সকালে আদালত অবমাননার দায়ে কুমিল্লার সাবেক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল রানাকে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। এসময় তাঁকে সাত দিনের মধ্যে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। আর আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী প্রণয় কান্তি রায়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামুন চৌধুরী ও রিয়া আক্তার দম্পতির বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা হয়। মামলাটির কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে মামুন-রিয়া দম্পতির করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর হাইকোর্ট মামলাটির কার্যক্রম চার মাসের জন্য স্থগিত করার পাশাপাশি রুল জারি করেন। ২০১৯ সালের ৬ মার্চ হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন।
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও কুমিল্লার তৎকালীন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা গত ১০ এপ্রিল মামলায় অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনকালে আদালতে মামুন উপস্থিত ছিলেন। রিয়া অনুপস্থিত থাকায় তাঁকে পলাতক ঘোষণা করেন আদালত।
এ অবস্থায় উচ্চ আদালতের আদেশ উপেক্ষার বিষয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করতে সোহেল রানাকে হাজির হতে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন মামুন।
গত ১৪ আগস্ট হাইকোর্ট এক আদেশে সোহেল রানাকে তলব করেন। উচ্চ আদালতের আদেশ উপেক্ষার বিষয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গত ২১ আগস্ট তাঁকে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়। ধার্য তারিখে তিনি হাইকোর্টে হাজির হন। পরবর্তী সময়ে জবাব দাখিল করেন। তবে জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ২৮ আগস্ট সোহেল রানার প্রতি স্বতঃপ্রণোদিত আদালত অবমাননার রুল দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ৯ অক্টোবর তাঁকে হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালত অবমাননার রুলের পর গত ৩১ আগস্ট সোহেল রানা মামলাটির অভিযোগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার করেন। হাইকোর্টের ধার্য তারিখে সোহেল রানা সময়ের আরজি জানান। হাইকোর্ট ১২ অক্টোবর পরবর্তী তারিখ রাখেন।