আনসারকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া আতঙ্কের বিষয় : ১২ দলীয় জেট
আনসার বাহিনীকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া আতঙ্কের বিষয় বলে মনে করে ১২ দলীয় জোট। একই সঙ্গে জোটের নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে অসদুদ্দেশ্যে প্রণীত ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল’ প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
আজ বুধবার (২৫ অক্টোবর) ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে জোটের নেতারা বলেন, আনসারকে পুলিশের মতো গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা প্রদান করা হবে। পুলিশের মতো আনসার সদস্যরাও যাকে খুশি গ্রেপ্তার করতে পারবে। এমন বিধান রেখে ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল-২০২৩’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তার জন্য আনসার বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এই বিল পাস হলে পুলিশ যা করে, আনসার বাহিনীও তা করতে পারবে। ফলে দেশে স্বৈরতন্ত্র পাকাপোক্ত করতে আওয়ামী সরকারের দমন-পীড়ন ক্ষমতা দ্বিগুণ বেড়ে যাবে।
নেতৃবৃন্দ মনে করেন, পুলিশের মতো অপরাধ তদন্ত করার ক্ষমতা পেলে আনসার বাহিনীও ফৌজদারি মামলা তদন্ত করার ক্ষমতা পাবে যা বর্তমানে শুধুমাত্র পুলিশের এখতিয়ারভুক্ত বিষয়। তদন্ত করার জন্য পুলিশের মতো আরেকটি সমান্তরাল বাহিনী গঠন করা হলে তা পুলিশ বাহিনীর কাছেও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। এই বিলটি বাস্তবায়ন করা মোটেও উচিত হবে না। এটি হবে বিরোধী দল দমনে এবং গণতন্ত্রকে কবরস্থানে পাঠানোর আরেকটি ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭২ সালে রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে বাধাদান করা এবং নিষ্ঠুরভাবে দমন-পীড়নের উদ্দেশ্যে রক্ষী বাহিনী নামে একটি আধা সামরিক বাহিনী গঠন করেছিল। রক্ষী বাহিনী হাজার হাজার বিরোধী দলীয় নেতা কর্মীকে আটক, নির্যাতন ও গুম-খুনের মতো ঘটনা ঘটিয়েছিল। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর খোলসে বিরোধী দলকে দমন করার পরিণতি অতীতে ভালো হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। আমরা সরকারকে স্বাধীনতার চেতনা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সম্মান করে আনসার বাহিনীকে আরেকটি পুলিশ বাহিনী বানানোর দুরভিসন্ধিমূলক কার্যক্রম থেকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি। আনসার বাহিনীকে পুলিশের মতো ক্ষমতা দিলে তা গণতন্ত্র, বিরোধী দল এবং জনগণকে দমন-পীড়ন করার আরেকটি নতুন কলঙ্কিত ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন-জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ১২ দলীয় জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, জোটের মুখপাত্র কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, ইসলামিক ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সভাপতি ড. সৈয়দ জাভেদ মোহাম্মদ সালেহউদ্দিন প্রমুখ।