সারওয়ার্দীর মুখোমুখি করে আরেফীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে : ডিবি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা মিয়ান আরেফীকে রিমান্ডে নিয়ে সারওয়ার্দীর মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে ডিবি। আজ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হাসান সারওয়ার্দীকে রিমান্ডে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়ান আরেফীকেও আজ পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।’
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘২৮ অক্টোবরের ঘটনা সম্পর্কে তাদের তথ্যে গরমিল থাকায় রিমান্ডে এনে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দেশের বাইরে থেকে কেউ ষড়যন্ত্র করেছিল কি না, সে বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
গড় ২৮ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেওয়া মিয়া আরেফিকে দিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করান অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। এ ঘটনায় ২৯ অক্টোবর সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আরেফিকে আটক করে পুলিশ। ৩১ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন সারওয়ার্দী। এ বিষয়ে পল্টন থানায় করা মামলায় সারওয়ার্দীকে ইতিমধ্যে আট দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করে। ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশেরর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা ও সরকারি গাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। একপর্যায়ে দুপুর ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
এজাহারে বাদী বলেন, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে আসামি মিয়ান আরাফি, হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মী কিছু সংবাদ মাধ্যমের সামনে উপস্থিত হন। এসময় ১ নম্বর আসামি মিয়ান আরাফি নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি। সেখানে ১ নম্বর আসামি মিয়ান আরাফি বক্তব্যে দাবি করেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। এই আসামি আরও দাবি করেন, তিনি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
এজাহারে বাদী আরও অভিযোগ করেন, ২ নম্বর আসামি হাসান সারওয়ার্দী এবং ৩ নম্বর আসামি ইশরাক হোসেন তাকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। ১ নম্বর আসামি অন্য আসামিদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি করে সারাদেশে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।
এজাহারে বলা হয়, ওই সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে ১ নম্বর আসামির বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশের আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটে।