বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আবাসিক হলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঢুকে শিক্ষার্থীদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীমের এক অনুসারীর বিরুদ্ধে। প্রতিমন্ত্রীর কর্মসূচিতে না যাওয়ায় এই হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের। গতকাল সোমবার (১৩ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে   সদর উপজেলার দুর্গাপুর এলাকায় ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রাবাসটিতে থাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিমন্ত্রীর অনুসারীর হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহতরা হলেন- তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আতিক শাহরিয়ার (২৪), দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী স্বপ্নীল ও আশিকুজ্জামান সজীব।

তবে, হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী সাকিব। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া ওই শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তিনি দাবি করেন, ছাত্রাবাসে ঢুকে হামলা চালানোর মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আহত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সোমবার কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম। ওই অনুষ্ঠানে আবাসিক ছাত্রদের উপস্থিত থাকার জন্য রোববার রাতে হুমকি দিয়ে আসে সাকিব। কর্মসূচিতে অংশ নেয়নি এমন শিক্ষার্থীদের শাসাতে গতকাল রাতে তিন দফায় সাকিবের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন ছাত্রাবাসে যায়। রাত ৮টার দিকে ছাত্রাবাসে ঢুকে ১৫ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে তারা।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছিল। বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা ম্যুরালের ভাঙচুরের চেষ্টা চালালে সাধারণ ছাত্ররা বাধা দেয়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আবাসিক হলে ঢুকে হামলা চালানোর মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

শিক্ষার্থী আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, ‘আহতদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা ক্যাম্পাসে রয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সহকারী অধ্যাপক লিটন রাব্বানী বলেন, ‘আমরা আপাতত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এ বিষয়ে আলোচনা করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে জানতে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি।