কানাডাগামী ৪৫ যাত্রীকে যে কারণে ফিরিয়ে দিয়েছিল বিমান
পাসপোর্টে কানাডার ভিসাসহ ছিল আসা-যাওয়ার বিমান টিকিটও। ৪৫ জনই যাচ্ছিলেন একই ব্যক্তির আমন্ত্রণে। এতে সন্দেহ হয় বিমানের সিলেট স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের। ফলে সবাই আটকা পড়েন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এ নিয়ে আজ মুখ খুলল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা তুলে ধরে তাদের ‘বক্তব্য’।
‘কানাডাগামী ফ্লাইটের ৪৫ যাত্রীকে অফলোড প্রসঙ্গে বিমানের বক্তব্য’ শিরোনামে বিমান বলছে, গত ৬ নভেম্বর রাত ৮টা ২৫ মিনিটে বিমানের ফ্লাইট বিজি৬০৬-এ সিলেট থেকে ৭৪ জন যাত্রী ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিলেন টরন্টো ফ্লাইটের (বিজি৩০৫) যাত্রী। বিমানের সিলেট স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা যাত্রীদের ভ্রমণসংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখেন, ৪৫ যাত্রী একই ব্যক্তির আমন্ত্রণপত্রের মাধ্যমে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কানাডা যাচ্ছেন। তাৎক্ষণিক তারা কাগজপত্র পর্যালোচনা করেন। সন্দেহ হওয়ায় সিলেট স্টেশন থেকে যাত্রীর কাগজপত্র ঢাকার পাসপোর্ট কন্ট্রোল ইউনিটে (পিসিইউ) পাঠানো হয়।
ওই ইউনিট কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দিল্লির কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির (সিবিএসএ) কাছে পাঠানো হলে প্রথমে তারা জানায়, সিবিএসএর সিস্টেমে যাত্রীর তালিকায় যাত্রীর তথ্য সঠিক রয়েছে। ফলে সিলেট থেকে যাত্রীদেরকে বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করা হয় এবং যাত্রীরা ঢাকায় পৌঁছান।
এরইমধ্যে কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি আবারও জানায়, যাত্রীদের আমন্ত্রণপত্রের তথ্যের সঙ্গে আবাসন বিষয়ে সিস্টেমে গরমিল রয়েছে। যাত্রীদের আমন্ত্রণপত্রে হোটেলে থাকার কথা থাকলেও যাত্রীদের কাছে রেন্টেড হাউজের (ভাড়া বাড়ি) ডকুমেন্ট পাওয়া গেছে। কানাডার আইন অনুযায়ী, একটি ভাড়া বাড়িতে ৪৫ জন যাত্রী থাকার কোনো নিয়ম নেই এবং তা ফায়ার কোড ভায়োলেশন বলে উল্লেখ করা হয়।
যাত্রীদের কাগজপত্র ও কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির বার্তা পর্যালোচনা এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে ৪৫ যাত্রীকে ৭ নভেম্বর টরন্টো ফ্লাইট থেকে অফলোড (ভারমুক্ত) করা হয়।
বিমান তাদের বক্তব্যে জানায়, ঢাকার পাসপোর্ট কন্ট্রোল ইউনিটের (পিসিইউ) মাধ্যমে ওই যাত্রীদের তথ্য সিবিএসএ-এর কাছে পাঠানো হয়েছে। সিবিএসএ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের ভিসা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কানাডার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের পর সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের ইমেইলে সিদ্ধান্ত জানাবে।
বিমান আরও জানায়, ওই ৪৫ যাত্রীকে হোটেলে থাকার জন্য প্রস্তাব করা হলে তারা সেখানে যেতে চাননি। টরন্টো ফ্লাইটে না পাঠানোর বিষয়টি বুঝিয়ে বলা হলে তারা বিষয়টি বুঝতে পারেন।
পরে ইমিগ্রেশন হতে তাদের বহির্গমন সিল বাতিল করে তাদের ব্যাগপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয় এবং যাত্রীরা এয়ারপোর্ট ত্যাগ করেন। এ সময়ে যাত্রীদের রাতের খাবার ও সকালের নাস্তা সরবরাহ করা হয়।
বিমান আরও জানায়, যাত্রীর কাছে যথাযথ কাগজপত্র না থাকলে বা এ ধরনের ভায়োলেশনের জন্য কানাডার কর্তৃপক্ষ যাত্রীপ্রতি সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সকে তিন হাজার ২০০ থেকে ২০ হাজার ডলার (কানাডা) পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে।