‘আমার ছেলে-মা অসুস্থ, আমাকে নিয়েন না ভাই'
পলাতক যুবদলনেতা অসুস্থ মা ও শিশুসন্তানকে কিছু সময়ের জন্য বাড়িতে বাড়িতে দেখতে এসে গ্রেপ্তার হয়ে আকুতি ‘আমাকে নিয়েন না ভাই, আমার ছেলে অসুস্থ, আমার মা অসুস্থ। আমাকে একটু পোশাক পরার সুযোগ দেন।’
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিফতাহ উদ্দিন শিকদারকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তারের সময় এভাবেই পুলিশকে অনুনয়-বিনয় করেন তিনি।
আজ শুক্রবার বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে গ্রেপ্তারের এ ভিডিও তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার করা হয়। মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় এসব ভিডিও ধারণ করা হয়।
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহদাৎ হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ‘মানুষতো কত কিছুই বলে। এসব অভিযোগের ভিত্তি নেই। মিফতাহ উদ্দিনকে নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
বিএনপির মিডিয়া সেলের সরবরাহ করা ভিডিওতে দেখা যায়, যুবদলনেতা মিফতাহ উদ্দিনকে খালি গায়ে সাদাপোশাকের পুলিশ আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। তখন তিনি পুলিশকে বলছেন, ‘আমাকে নিয়েন না ভাই। আমার ছেলে অসুস্থ, আমার মা অসুস্থ। আমাকে একটু পোশাক পরার সুযোগ দেন।’
এ সময় মিফতাহর মাসহ পরিবারের স্বজনরা গাড়িটি ঘিরে ধরেন। তখন মাকে উদ্দেশ করে মিফতাহ উদ্দিন বলেন, ‘মা, তুমি টেনশন করো না। আমি আবার ফিরে আসব।’ এ সময় এক পুলিশ সদস্যকে বলতে শোনা যায়, ‘এই চুপ থাক। তোর শরীরে একটু আঘাতও কেউ দেবে না।’
যুবদলনেতার স্বজনরা জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। অসুস্থ মা ও শিশুসন্তানকে দেখতে কিছু সময়ের জন্য বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে সাদ পোশাকের পুলিশ।
এদিকে, গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত যশোর জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিএনপির ছয় নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘আজ রাজপথে বিএনপির কোনো কর্মসূচি না থাকলেও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান থেমে নেই। বিএনপির চলমান এক দফার আন্দোলনে পুলিশের দমন-পীড়নের অংশ হিসেবে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমনটা হতে পারে না।’

সাইফুল ইসলাম সজল, যশোর