৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি
আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে অনুষ্ঠেয় ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা নির্বাচনের পরে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) পরীক্ষার্থীরা নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে এ দাবি জানাতে আসেন। তবে, সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ না হলেও তারা পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়ে একটি চিঠি দিয়ে যান।
আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) প্রায় ৫০ জন পরীক্ষার্থী তাদের দাবি নিয়ে নির্বাচন ভবনে আসেন। যারা সবাই প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বলে নিজেদের দাবি করেন। তাদের মধ্যে একজন এস এম হামিদুল্লাহ কায়সার সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেহেতু রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ, তাই আমরা পরীক্ষা পেছানোর জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। এটি গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেছেন, নির্বাচন কমিশন থেকে যদি বলা হয়, তাহলে তারা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
পরীক্ষা পেছানোর প্রয়োজন কেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এস এম হামিদুল্লাহ কায়সার বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটু খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিরোধী দলগুলোর হরতাল, অবরোধ যেভাবে চলছে, সেভাবে চলবে। সেক্ষেত্রে ঢাকায় আমরা বেশির ভাগ পরীক্ষার্থী শঙ্কায় আছি, পরিস্থিতি কেমন হবে? যেহেতু আমাদের টানা ১৫ দিন পরীক্ষা। এজন্য আমাদের শঙ্কা, সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষা শেষ করতে পারব কি না! আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষা।’
এস এম হামিদুল্লাহ কায়সার আরও বলেন, ‘এখন কমিশনে আমরা আবেদন নিয়ে এসেছি। ১২ হাজার পরীক্ষার্থীর জরিপ নিয়ে এসেছি। এতে ৯৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছেন।’
নির্বাচন হয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা কি আপনারা নিশ্চিত? জবাবে এই পরীক্ষার্থী বলেন, ‘সেটা আমরা বলতে পারব না। তবে বর্তমানে যে পরিস্থিতি, এতে কমিশনই ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’
এস এম হামিদুল্লাহ কায়সার বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি আছে। কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু, কমিশন যেন একটা প্রোপার সিদ্ধান্ত নেয়। পরীক্ষা যদি ভোটের পরে হয়, তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়। এ ছাড়া অফ ডে-তে পরীক্ষা নেওয়া বা পরিবহণ ব্যবস্থা করার পদক্ষেপ তারা নিতে পারেন। তাদের সিদ্ধান্ত যেন আমাদের ফেভারে (পক্ষে) হয়।’
পরীক্ষার্থীরা সিইসিকে লেখা চিঠিতে বলেন, ‘একজন চাকরিপ্রার্থী ও ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার্থী হিসেবে উক্ত সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। তবে বর্তমানে বিরোধী দলগুলোর টানা হরতাল-অবরোধ চলছে। এ ছাড়া নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চলমান হরতাল-অবরোধ আরও ব্যাপক ও ধ্বংসাত্মক আকার ধারণ করেছে।’
চিঠিতে আরও জানানো হয়, ‘গত পরশু কুমিল্লায় ককটেল বোমা বিস্ফোরণে আহত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নানের ছেলে আকিব মাহমুদ (৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার্থী)। বিদ্যমান অরাজকতার শিকার হয়ে ছিটকে গেছেন লিখিত পরীক্ষা থেকে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্য সেন হলের ছাত্র মঈনুল ইসলাম (যিনিও একজন লিখিত প্রার্থী) গত ১৮ নভেম্বর মারাত্মকভাবে আহত হন। দীর্ঘ ১৫ দিনের পরীক্ষায় এমন অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার শিকার হতে পারেন অসংখ্য পরীক্ষার্থী।’
তাই চিঠিতে তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন জানিয়ে আরও বলেন, যেন তাদের নিরাপত্তা ও শঙ্কার বিষয়গুলো মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনা করা হয়।