জাতীয় সমাজসেবা দিবস আজ
জাতীয় সমাজসেবা দিবস আজ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি)। এদিন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দিবসটি উদযাপন করা হবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য সমাজসেবায় গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সোমবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, ‘সরকারি সেবার সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে উদ্যমী ও সৃষ্টিশীল ব্যক্তি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাসহ সবাইকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আট মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। পাকিস্তানি কারাগারের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এজন্য তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদ সন্নিবেশনের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তাকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত করেন। পরে, ১৯৭৪ সালে সুদমুক্ত ঋণ কার্যক্রম প্রচলন করে দেশে ও সমসাময়িক বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করেন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়ার জন্য সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন মেগা প্রকল্প গ্রহণ ও সামাজিক নিরাপত্তাবলয় দৃঢ়ীকরণের ফলে দেশে দারিদ্র্যের হার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। জীবনচক্রভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে একটি দৃঢ় কল্যাণ রাষ্ট্রে উন্নীত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, শেখ হাসিনা বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অসহায়, অনগ্রসর মানুষকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য দেশ পুনর্গঠনের শুরুতেই সাংবিধানিক নিশ্চয়তা প্রদানসহ সুদূরপ্রসারী বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২ জানুয়ারি ‘জাতীয় সমাজসেবা দিবস’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘সমাজ সেবায় গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।” তিনি বলেন, ‘১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি প্রবর্তন ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য পল্লী মাতৃকেন্দ্র শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেন। শিশুদের সুরক্ষায় প্রণয়ন করেন শিশু আইন, ১৯৭৪। জাতির পিতা শিশু বিকাশের লক্ষ্যে কেয়ার অ্যান্ড প্রোটেকশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন, বর্তমানে যা সরকারি শিশু পরিবার নামে পরিচিত। প্রতিটি শিশু পরিবারে আমাদের সরকার প্রবীণদের জন্য ১০টি আসন বরাদ্দ রাখার ব্যবস্থা করেছে। বর্তমানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন ধরনের ২২৬টি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের হতদরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত শিশু, অনাথ প্রতিবন্ধী, কিশোর-কিশোরী, স্বামী নিগৃহীতা নারী ও প্রবীণ ব্যক্তিবর্গসহ সহায় সম্বলহীন মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে লাগসই ও টেকসই প্রকল্প গ্রহণসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মোট ৫৪টি জনহিতকর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে এক কোটি ১৫ লাখ উপকারভোগীর ভাতা ও অনুদানের টাকা সরাসরি তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে জি-টু-পি পদ্ধতিতে।’
এ ছাড়া, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে নেওয়া সব কর্মসূচির সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করেন।