ভৈরবে গরিবদের জন্য মেহমানখানা
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্রামের গরিব-অসহায়দের জন্য মেহমানখানা খুলে বেশ সাড়া ফেলেছেন একঝাঁক তরুণ। সেখানে এলাকার দুই থেকে আড়াইশ গরিব মানুষকে উন্নতমানের খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার দুপুরে এই আয়োজন করা হয়। সেই মেহমানখানায় আগে থেকেই সম্মানের সঙ্গে দাওয়াত কার্ড পৌঁছে দেওয়া হয় মেহমানদের বাড়ি বাড়ি।
নির্ধারিত দিনে মেহমানরা হাজির হলে আয়োজককর্মীরা অত্যন্ত খাতির যত্ন করে খাবার পরিবেশ করেন। একজন মেহমান যতক্ষণ খেতে পারেন, ততক্ষণ খাবার দেওয়া হয়। আর খাবারের তালিকায় কখনও থাকে ভাত-পোলাও, মাছ-সবজি, গরু-খাসি-মুরগির মাংস ও ডাল। কখনও বা বিরানি/তেহারি বা ভুনাখচুরি। সঙ্গে টমেটো/শষা-খিরার সালাদ। আবার কখনও পরিবেশিত হয় দুধ/দই।
দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন নিয়মিত আয়োজন করে আসছেন উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের ঝগড়ারচর গ্রামের পাণ্ডব বেপারিবাড়ির একঝাঁক যুবক। এলাকার ব্যবসায়ী/প্রবাসী আর চাকরিজীবীদের কাছ থেকে নেওয়া আর্থিক সহায়তা আর নিজেদের শ্রমকে পূঁজি করে এমন মহতী আয়োজন করে আসছেন তাঁরা। যা এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রশংসায় ভাসছেন সুধীজনদের।
এই আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা কবির আহমেদ ও শাকিল মিয়া জানান, বর্তমানে বাজারদরের ঊর্ধ্বগতির কারণে সমাজের গরিব মানুষদের পক্ষে ভালো খাবার বিশেষ করে মাছ-মাংস কিনে খাওয়া কষ্টকর। সেই দিকটি বিবেচেনা করে তাঁরা এমন আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যা নিয়মিত করে যাচ্ছেন এক বছর ধরে। আগামী দিনেও এই আয়োজন অব্যাহত রাখবেন বলে জানান তাঁরা।
মাওলানা আব্দুস সালাম ও প্রভাষক সাইদুর রহমান নামের স্থানীয় দুই ব্যক্তি জানান, পাণ্ডব বেপারিবাড়ির যুবকদের এই মহতী উদ্যোগ ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন তাঁদের সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাঁরা প্রত্যাশা করছেন, তাঁদের এমন উদ্যোগ অন্যান্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়বে। আর এতে উপকৃত হবে প্রতিটি এলাকার গরিব-অসহায় লোকজন।
‘মেহমানখানার’ মেহমানরা জানান, প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার দুপুরের এই আয়োজনে তারা নিয়মিত অতিথি হয়ে ভালো খাবার খেয়ে যাচ্ছেন অনেক দিন ধরে। যেসব খাবার তাদের কেনার সাধ্যের বাইরে, সেসব অন্তত মাসে একবার খেতে পাওয়ায় তারা বেশ খুশি। এমন আয়োজন যাঁরা করছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এই আয়োজন আগামীতেও অব্যাহত থাকলে তাঁরা উপকৃত হবেন বলেও জানান।