বেইলি রোড ট্র্যাজেডিতে নিহত তিন বোনের দাফন সম্পন্ন
ঢাকার বেইলি রোড ট্র্যাজেডিতে কুমিল্লার আপন দুই বোনসহ তিন বোন নিহত হয়েছেন। আপন দুই বোন হলেন লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের চরবাড়িয়া এলাকার হাজি কোরবান আলীর মেয়ে ফৌজিয়া আফরিন রিয়া (২৩) ও সাদিয়া আফরিন আলিশা (১৪)। অপরজন খালাতো নুসরাত জাহান নিমু (১৮)। আজ শুক্রবার (১ মার্চ) তিন বোনেরই দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বড় বোন রিয়া মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সাদিয়া আফরিন আলিশা ভিকারুননিসা নূন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। খালাতো নুসরাত জাহান নিমু সিটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হাজি কোরবান আলীর ভায়রাভাই সদর উপজেলার বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুসের মেয়ে।
আজ সকালে তিনজনের মরদেহ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় নিয়ে আসে স্বজনরা। এ সময় স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠে বাড়ির পরিবেশ। দূরদূরান্ত থেকে স্বজনরা এসেছেন সান্ত্বনা দিতে।
দুই মেয়ে হারিয়ে পাগলপ্রায় গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কোরবান আলী। আজ দুপুরে কোরবান আলীর বাড়ি উপজেলার চরবাড়িয়ায় গিয়ে দেখা যায় আত্মীয় স্বজনরা বিলাপ করছেন।
কোরবান আলী জানান, তাঁর বড় মেয়ে ফৌজিয়া আফরিন রিয়া মালয়েশিয়া ইসলামি ইউনিভার্সিটিতে এমবিএ ফাইনাল পরীক্ষার্থী ছিলেন। কয়েকদিন আগে তাঁর সঙ্গেই বাংলাদেশে আসেন। আগামীকাল শনিবার তাঁর মালেয়শিয়া ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠেন কোরবান আলী। তিনি বলেন, রিয়া মালয়েশিয়া ফিরে যাবে। তাই তারা দুবোনসহ আমার ভায়রা ভাইয়ের মেয়েসহ প্রথমে পিজা হাটে যায়। সেখানে কার্ড পাঞ্চ করে। আগুনের ঘটনা শুনে প্রথমে আমরা নিশ্চিত হই আমার মেয়েরা ভালো আছে। পরে হঠাৎ ফোন আসে। মেয়েরা চিৎকার করতে করতে বলে বাবা আমরা বেইলি রোডে ‘কাচ্চি ভাই’-এ। এখানে আগুন লাগছে। আমাদের বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিল। দৌড়ে সেখানে গিয়ে দেখি আমার দুই মেয়েসহ আমার ভায়রা ভাইয়ের মেয়ের মরদেহ পড়ে আছে। আমি এ শোক কেমনে সইব?’
চাচা লোকমান হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি প্রথমে যারা বেঁচে ছিলেন তাদের বিল্ডিং থেকে নামানো হচ্ছে। যখন জীবিতদের নামানো শেষ হয়েছে তখন কলিজা মোচড় দিয়ে উঠে। আমার ভাতিজিরা আর বেঁচে নেই।
আজ জুমার নামাজের পর প্রথমে সদর উপজেলায় নুসরাত জাহান নিমুর পরে বিকেল ৪টায় রিয়া ও আলিশা মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
তবে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে কুমিল্লার মোট কতজন নিহত হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি জেলা প্রশাসন।