ভেজালমুক্ত ইফতারি ও খাদ্যের দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন
ভেজালমুক্ত ইফতারি ও খাদ্যের নিশ্চয়তার দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছে কয়েকটি সামাজিক সংগঠন। আজ শনিবার (৯ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলন (বানিপা), গ্রিন ফোর্স, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ, বারসিক, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন-এর যৌথ উদ্যোগে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। প্রতিবছরই আমরা দেখতে পাই রমজানে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পোড়া তেল ও মবিল মিশ্রিত তেল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ইফতার সামগ্রী ভাজা হয়। এছাড়াও একই তেল বার বার ব্যবহার করা হয়। রাসায়নিক রং ও বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে ভোজ্য তেল তৈরী করা হয়। বিষাক্ত রং ব্যবহার করে সাদা ডিম লাল করা হয়। এছাড়াও পঁচা-বাসীসহ বিভিন্নভাবে ভেজাল ও বিষাক্ত খাদ্যেও ব্যপকতা বেড়ে যায়। এতে ক্যানসার, কিডনি ও লিভারের জটিল রোগ সৃষ্টিসহ গর্ভস্থ শিশু প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)-এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে এবং পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পবার কার্যকরী সভাপতি জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, নাসফের সাধারণ সম্পাদক ও পবার সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, পবার সম্পাদক ও বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলনের সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বারসিকের সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি হাজী শেখ আনসার আলী, স্পেস এর প্রধান নির্বাহী শিমুল খান। ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন এর মুখপাত্র মো. ইমরান হোসেন, আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী বাস্তহারা লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ হাওলাদার, মানবাধিকারকর্মী জাকিয়া শিশির, পবার সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ। মানববন্ধনে পবার ও গ্রীন ফোর্সের নের্তৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর রাজধানীসহ সারা দেশে প্রচুর ইফতারজাতীয় খাবার বিক্রি হয়। এই সুযোগেই মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত লাভের আশায় ইফতারিতে ভেজাল মেশায়। খাদ্যে ভেজাল এমন একটি নীরব ঘাতক। এতে দেশের অধিকাংশ মানুষ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ইফতারিসহ সকল খাদ্য বিষ ও ভেজালমুক্ত করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সকলের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
আবু নাসের খান বলেন, আমরা বিশুদ্ধ, ভেজাল ও বিষ মুক্ত খাদ্য চাই। তাছাড়া বিশুদ্ধ খাদ্য সুস্থ ও সমৃদ্ধশালী জাতি গঠনে একান্ত অপরিহার্য। আমাদের বিশুদ্ধ খাবার প্রাপ্তি কঠিন করে ফেলছে কিছু বিবেকহীন ব্যবসায়ী ও আড়তদার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে। আমরা মনে করি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের তদারকি আরো বাড়াতে হবে, সব বাজার গুলোতে। শুধু ছোটো দোকানদারদের ওপর শুধু চাপ সৃষ্টি করে হবে না, কারখানাগুলোতে তদারকি বাড়াতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও গণমানুষকে সচেতন করার মাধ্যমেই ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।