নৌপথে ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে ১১ দিন বাল্কহেড বন্ধ
পবিত্র ঈদে নৌপথ ব্যবহারকারী ঘরমুখো মানুষের যাত্রা সহজ ও নিরাপদ করতে নৌপুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ৩ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিন এ বিশেষ নিরাপত্তা থাকবে। এর মধ্যে ঈদের আগে ও পরে ১১ দিন বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
আজ বুধবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর নৌপুলিশের সদর দপ্তরে ঈদ উপলক্ষে নৌপথে আইনশৃঙ্খলা ও নৌ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নৌপুলিশ প্রধান বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ।
এ সভায় বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, বাঅনৌচ (যাপ), লঞ্চ মালিক সমিতি, নৌপরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌপরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশন, কার্গো ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ জাহাজি শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্ক হেড শ্রমিক ইউনিয়ন, লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন বাঘাবাড়ি, সুন্দরবন নেভিগেশন সদরঘাট, এমকে শিপিং লাইন্সসহ নৌযান ও নৌপথের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা, অতিরিক্ত ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ, ডিসি লালবাগ, ডিএমপি, নৌপুলিশের সব অঞ্চলের পুলিশ সুপারসহ নৌপুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ নৌপথ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
সভায় লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করা থেকে বিরত থাকা, ছোট ও ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চে যাত্রী পরিবহণে বিরত থাকা, লঞ্চে যাত্রী সংখ্যার আনুপাতিক হারে লাইফ জ্যাকেট, বয়া প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান চালানো, সূর্যাস্তের পর বালুবাহী বাল্কহেড ও স্পিড বোট চলাচল বন্ধ রাখা, ঈদ পূর্ববর্তী পাঁচ দিন, ঈদ এবং ঈদ পরবর্তী পাঁচ দিনসহ মোট ১১ দিন বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা, চাঁদাবাজি, চুরিসহ যেকোনো হয়রানি বন্ধে বিশেষ নজরদারি বৃদ্ধি করা, নৌযান চলাচলের পথে মাছ শিকারের জন্য জাল বিছানো প্রতিরোধ করা, বৈধ কাগজপত্রবিহীন কোনো নৌযান না চালানো, ন্যায্যমূল্যে ভাড়া আদায়ে তদারকি, টার্মিনাল ব্যতীত নদীর যেকোনো জায়গায় অন্য কোনো ছোট নৌযান থেকে যাত্রী ওঠানো বা নামানো বন্ধ নিশ্চিত করা, সব নৌযানে পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিংয়ের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় অতিরিক্ত আইজি মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের নৌপথে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে নৌপুলিশ বদ্ধপরিকর। পবিত্র ঈদে নৌযাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে নৌপুলিশ সব নৌঘাট, নৌটার্মিনালে একটানা ১৫ দিন বিশেষ সেবা প্রদান ও দায়িত্ব পালন করবে নৌপুলিশ।
আবদুল আলীম মাহমুদ আরও বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে অনেকেই দেশের দর্শনীয় স্থানসমূহে ভ্রমণ করেন। এক্ষেত্রে নৌপথে নিরাপত্তা বিধানে এসব নৌযান চলাচলের বিষয়ে নৌপুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে।
নৌপুলিশ প্রধান বলেন, সময়ের চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। কোনো নৌযান যেন প্রতিযোগিতামূলকভাবে বেশি যাত্রী বোঝাই না করে, বেশি স্পিড দিয়ে নৌযান না চালায়।
আবদুল আলীম মাহমুদ আরও বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনে নৌপথ ব্যবহারকারী প্রত্যকেই যেন নিরাপদে তাদের পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে নৌপুলিশ সবসময়ই পাশে থাকবে।