পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিল সিটিটিসি
মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগ।
সম্প্রতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিটিটিসি উপপরিদর্শক মোহাম্মদ রাহাত হোসেন ঢাকার সিএমএম আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিককে আসামি করা হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় আরেক আসামি খালেদা জিয়ার উপপ্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারীকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিটিটিসি উপপরিদর্শক মোহাম্মদ রাহাত হোসেন বলেন, ‘মামলার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য হওয়ায় দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছি। তবে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় একজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছি। সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে ঘটনার প্রমাণ দেবেন।’
অভিযোগপত্রে ১৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়েছে। এ মামলার আসামি মফিজুর জামিনে রয়েছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর পরিচিত এবং তারা দেশের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করার প্রয়াসে বিভিন্ন সময়ে উসকানিমূলক তথ্য প্রচারে সর্বদা লিপ্ত থাকে। বর্তমান সময়ে আসামি পিনাকী ভট্টাচার্য তার ফেসবুক পেজ ও আইডিতে বিভিন্ন সময়ে উসকানিমূলক মিথ্যা-ভিত্তিহীন তথ্য গুজব আকারে প্রচার করছে। তিনি সামাজিক মাধ্যমে বর্তমান সময়েও দেশ ও দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রয়াসে গুজব ও মিথ্যা তথ্য সম্প্রচার করছে। যা উসকানিমূলক ও এজাহারের বিষয় বস্তুর সদৃশ্য কর্মকাণ্ডকে প্রতিনিধিত্ব করে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, আসামি মো. মফিজুর রহমান আশিক ইচ্ছাকৃতভাবে নিজ মোবাইলফোন ব্যবহার করে ডিজিটাল উপায়ে ফেক আইডি দিয়ে তার প্রেরিত ও প্রকাশিত ছবিগুলো মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলেন। যা পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার উপক্রম হয়। এই ছবি মোবাইলে ধারণ, প্রেরণ ও প্রচার করে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেরণ করে বিভ্রান্তিকর ও প্রোপাগান্ডামূলক মিথ্যা পোস্ট করা ও প্রচার-প্রচারণায় যুক্ত থাকায় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৪, ২৫, ৩১ ও ৩৫ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামি মো. মফিজুর রহমান আশিক ছবিগুলো প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে তার সহযোগী পিনাকী ভট্টাচার্যকে ফেসবুকে প্রেরণ করেন৷ উক্ত বিষয় সম্পর্কে উভয়ের মধ্যে ফেসবুক আইডিতে চ্যাটিংয়ের তথ্য পাওয়ায় সহযোগী হিসেবে পিনাকীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ৩১ ও ৩৫ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। অপর আসামি মুশফিকুল ফজল আনসারীর বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণে সহায়ক কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় পিনাকী ভট্টাচার্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের উপপরিদর্শক এম আব্দুল্লাহিল মারুফ বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় মফিজুর রহমান ও মুশফিকুল ফজল আনসারী নামের অপর দুজনকে আসামি করা হয়।