ঈদে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ছুটি বাতিল
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সব ধরনের ছুটি বাতিল করে পুলিশ সদস্যদের মাঠ পর্যায়ে আন্তরিকতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাহাবুবর রহমান।
আজ শনিবার (১ জুন) উত্তরায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে শিল্পাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও পবিত্র ঈদুল আজহায় শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ সংক্রান্ত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মো. মাহাবুবর রহমানের সভাপতিত্বে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ এবং বেপজা, কলকারখানা অধিদপ্তর ও শ্রম অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, মালিকরা যদি শ্রমিকদের বেতন এবং ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করেন, তাহলে শিল্প সেক্টরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে। মহাসড়কগুলো নিরাপদ থাকবে। যেসব শিল্প-কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ও পাওনাদি যথাসময়ে পরিশোধ না করে প্রবাসে অবস্থান করেন, তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংগঠন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ সময় বিজিএমইএ সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের মতো কলকারখানা অধিদপ্তর, শ্রম অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সমন্বিতভাবে এবং পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করলে অধিকতর সুফল পাওয়া যাবে। সংগঠনভুক্ত কোনো কারখানা যথাসময়ে ঈদের আগে বেতন-বোনাস পরিশোধে ব্যর্থ হলে বিজিএমইএ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। পবিত্র ঈদকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস প্রদান সংক্রান্তে সব পক্ষের পারস্পরিক সমন্বয়ের বিকল্প নেই।
সভায় শিল্পাঞ্চল পুলিশের সব জোনের পুলিশ সুপাররা নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের শিল্প কারখানার সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। সভায় যেসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে–
১. বিভিন্ন কল-কারখানার বেতন পরিশোধের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে।
২. গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বেতন-ভাতা ও বোনাস প্রদান সংক্রান্তে সমস্যা হতে পারে এ রূপ কারখানা চিহ্নিত করা হয়েছে।
৩. এ বিষয়ে মালিক, পুলিশ, প্রশাসন কার কী করণীয় সেটাও নির্ধারণ করা হয়েছে।
৪. মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, ঈদের বোনাস যেন জুন মাসের শুরুতে দেওয়া হয়।
৫. কোনো গার্মেন্টসের মালিক বেতন-ভাতা দিতে ব্যর্থ হলে বিকল্প উপায় বের করার জন্য মালিক কর্তৃপক্ষকে এবং সংশিষ্ট সংগঠনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
৬. ঈদের ছুটির আগেই যেন মাসের বেতন দেওয়া হয়।
৭. মালিক-শ্রমিক সমঝোতার ভিত্তিতে যেন ঈদের ছুটি নির্ধারণ করা হয় সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
৮. ঈদের পূর্বে যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই যেন কোনো শ্রমিক ছাঁটাই বা লে অফ না করা হয়। এ বিষয়ে সব মালিক এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
৯. আসন্ন ঈদুল আজহায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতাকে কেন্দ্র করে কোন অপশক্তি যেন আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে, এ বিষয়ে গেয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করে সতর্ক থাকার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১০. ঈদের ছুটির সময় ফাঁকা কল-কারখানা অধ্যুষিত এলাকায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের বিশেষ টহল ডিউটির ব্যবস্থা থাকবে।
১১. ঈদের সাত দিন আগে থেকে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোলরুম ও হটলাইন সচল থাকবে (০১৩২০-১৭০০৯৮)।
সভায় বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সব ইউনিটের পুলিশ সুপার ও গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, চট্টগ্রাম ইপিজেড, কর্ণফুলি ইপিজেড ও কোরিয়ান ইপিজেডের প্রতিনিধিরা।