চেয়ারম্যান রবিউল হত্যা : কেউ গ্রেপ্তার ও মামলা হয়নি
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শরফপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবি হত্যা মামলায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আজ রোববার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় ডুমুরিয়ায় পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন হয়েছে।
চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম হত্যার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। তাঁকে হত্যার কারণ এখনও উদঘাটন করা যায়নি।
এদিকে চেয়ারম্যান রবিকে হারিয়ে শোকাতুর হয়ে পড়েছে শরফপুরের মানুষ। আজ সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। তাঁর মরদেহ দেখতে গ্রামের কয়েকশ’ মানুষ হাসপাতালে ভিড় করে। সবার চোখেই ছিল জল। অনেককে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলতে শোনা যায়, রবির কোনো শত্রু ছিল না। কেন হত্যা করা হলো তাঁকে?
স্থানীয়রা জানায়, ছাত্রলীগের হাত ধরে রাজনীতিতে হাতে খড়ি রবির। তিনি শরফপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সর্বশেষ ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। ৪২ বছর বয়সের মধ্যে পরপর তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। শেষ দুবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন।
তিনবারের চেয়ারম্যান হলেও খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন রবিউল। তাঁর বাড়ি শরফপুর ইউনিয়নের ভুলবাড়িয়া গ্রামে। তবে পরিবার নিয়ে থাকতেন খুলনা নগরের নিরালা আবাসিক এলাকায়। তাঁর স্ত্রী সমাজসেবা অধিদপ্তর খুলনায় চাকরি করেন। ৮ ও দেড় বছরের দুটি ছেলে আছে তাঁদের। রবিউল দুই ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে ষষ্ঠ।
এলাকায় অবস্থানরত ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সাংবাদিকদের জানান, রবিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ড জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। একসময়ের আতঙ্কের উপজেলা হিসেবে পরিচিত হলেও গত প্রায় ২২ বছর ধরে এ ধরনের কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। ওই সময় যাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করত, তারা এখন ছদ্মবেশে এলাকায় আছে।
পরিবারের লোকজন বলেন, রবিউল ইসলাম মোটরসাইকেলে করে একাই চলাফেরা করতেন। প্রতিদিন সকালে ডুমুরিয়ায় নিজের এলাকায় যেতেন আর রাতে খুলনায় ফিরে আসতেন। গতকালও রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডুমুরিয়া থেকে খুলনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। গুটুদিয়ার ওয়াপদা বাঁধের কাছে আসার পর সন্ত্রাসীরা তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন এবং ঘটনাস্থলে আসা একটি মহেন্দ্রর যাত্রীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসিফ ইকবাল বলেন, যেহেতু কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই, তাই কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত কুমার সাহা জানান, এখনও কোনো মামলা হয়নি, তবে তাঁদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।