গাজীপুর সিটির ক্ষতিগ্রস্ত আঞ্চলিক কার্যালয় পরিদর্শন মেয়র জায়েদার
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/07/29/gazipur_picture.jpg)
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে নাশকতাকারীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (গাসিক) গাছা ও টঙ্গী আঞ্চলিক কার্যালয় এবং একটি কাউন্সিলর কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন মেয়র জায়েদা খাতুন। আজ সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখে বিস্মিত হন তিনি।
এ সময় নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানান মেয়র। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত তাঁর ছেলে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন জাহাঙ্গীর আলমের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
গাসিক মেয়র বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে দুর্বৃত্তরা গাসিক ভবনসহ ১ নং জোনের টঙ্গী আঞ্চলিক কার্যালয় ও ৩ নং জোনের গাছা আঞ্চলিক কার্যালয় এবং বোর্ডবাজার এলাকার ৩৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের ভাঙচূর করা কার্যালয় ঘুরে দেখেন। হামলাকারীরা গাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও মালামালে অগ্নিসংযোগ করে। ক্ষয় ক্ষতির এসব ঘটনায় তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করছে। কমিটিকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।
এসব পরিদর্শনকালে মেয়রের সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মো. মাসুদুল হাসান বিল্লাল, জাহাঙ্গীর আলম, মীর আব্দুল গনি কাজল, সচিব আব্দুল হান্নান, সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আকবর হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক ও এ কে এম হারুনুর রশীদ, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা নমিতা দে, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফ হোসেন, মো. লেহাজ উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্যানেল মেয়র মাসুদুল হাসান বিল্লাল জানান, নাশকতাকারীদের হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সিটি করপোরেশনের ২০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত কমিটি তিনটির প্রতিবেদন পেলে পুরোপুরি ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
প্যানেল মেয়র আরও জানান, গত ১৯ জুলাই কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন গাসিক মেয়রের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম। পথে উত্তরার হাউজবিল্ডিং এলাকায় পৌঁছালে তাঁকে হত্যার উদ্দেশে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তাদের হামলায় তিনি ও তাঁর সঙ্গী তিন কাউন্সিলরসহ অন্তত ৩৭-৩৮ জন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় আহত যুবলীগকর্মী হামিদুল ইসলামকে টেনে হেঁচড়ে হাসপাতাল থেকে বাইরে বের করে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ উল্টো করে গাছে ঝুলিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়ে উল্লাস করে হামলাকারীরা। এ সময় তাদের ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে সেগুলোতে অগ্নিসংযোগ করে হামলাকারীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুরুতর আহত জাহাঙ্গীর আলমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরের দিন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ দিকে পরের দিন (২০ জুলাই) রাতে জাহাঙ্গীর আলমের ছয়দানা-হারিকেন ফ্যাক্টরি এলাকার বাসায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় হামলাকারীরা জাহাঙ্গীর আলমের মা মেয়র জায়েদা খাতুনকে হত্যার উদ্দেশে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে জায়েদা খাতুনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। হামলাকারীরা নগর ভবনসহ সিটি কর্পোরেশনের গাছা ও টঙ্গী আঞ্চলিক কার্যালয় এবং একটি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম জানান, মেয়র জায়েদা খাতুন ও তাঁর ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক তাঁদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। নাশকতার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।