টানা আটদিন পর শিল্পাঞ্চলখ্যাত সাভার ও আশুলিয়ায় কাজে যোগ দিয়েছে শিল্প পুলিশ। আজ মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকেই শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্ব মাঠে নেমেছেন বিশেষায়িত পুলিশের এই বিশেষ ইউনিটের সদস্যরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান, ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ছাড়াও শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায় রয়েছে ১৮০০ কারখানা। যেখানে কাজ করেন ১০ লাখের বেশি শ্রমিক। এই শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে ৬৯৭ জনের পুলিশের টিম।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দিন থেকে জনমনে পুলিশ সম্পর্কে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের মুখে গুটিয়ে রাখা হয় শিল্প পুলিশের কার্যক্রম। শুরু হয় সদস্যদের কর্মবিরতি। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীন হয়ে পরে শিল্পাঞ্চলের পরিবেশ।

উদ্ভুত বিশেষ পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। এ সময় শিল্প খাতকে অগ্রধিকার দিয়ে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় গত ৯ আগস্ট নামানো হয় সেনাবাহিনী। বর্তমানে সেনাবাহিনীও মাঠে রয়েছে বলে জানান তিনি।

সকালে শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা দেখা গেছে, শিল্প কারখানা ঘিরে বিশেষায়িত ইউনিটের সদস্যদের টহল কার্যক্রম।

এদিকে সেনাবাহিনীর কর্নেল আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্প কারখানাগুলোতে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেনাবাহিনী মাঠে ছিল। এখনো আছে। সেনাবাহিনীর একটি দল পোশাকশিল্প অধ্যুষিত আশুলিয়া এলাকায় পোশাক কারখানাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দিনব্যাপী টহল কার্যক্রম চালিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এখান থেকেও সেনা বাহিনীর সদস্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

এদিকে শিল্পাঞ্চলে শিল্প পুলিশের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় বিষয়ে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

বিজিএমইএর পরিচালক আসিফ আশরাফ জানান, আমরা এখন স্বস্তিতে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারব।

অপর পরিচালক শোভন ইসলাম জানান, শিল্পের নিরাপত্তায় শিল্প পুলিশের বিকল্প সেনাবাহিনী হতে পারে না। যার কাজ তাকেই দরকার।

শিল্প পুলিশকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে গত ১১ আগস্ট কর্মবিরতিতে থাকা পুলিশ সদস্যদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে বলেন, নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে কর্মবিরতিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে যোগ না দিলে তাদেরকে পলাতক ঘোষণা করা হবে। এর মধ্যেই কাজে যোগ দিলেন পুলিশের বিশেষায়িত এই ইউনিটের সদস্যরা।