বন্যাদুর্গতদের জন্য সারাদেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছে : দুর্যোগ উপদেষ্টা
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, এটি একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশ। বন্যাদুর্গতদের জন্য সারাদেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমি নিজেও শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম দেখেছি। ৭৫ বছর জীবনে সবার মাঝে এমন উদ্যম আর দেখিনি।
আজ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ফেনী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চলমান বন্যা পরিস্থিতির মূল্যায়ন এবং ত্রাণ তৎপরতা সমন্বয় সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ সব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, পরশুরামে তরুণ-যুবকদের পাঁচ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের দৃশ্য আমার নজরে এসেছে। তারা সরকারি কোনো বরাদ্দ বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের জন্য অপেক্ষা করেননি। সবার পাশে দাঁড়িয়ে তরুণদের এ কর্ম উদ্যম দেখে অভিভূত হয়েছি। দেশের তরুণরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ পরিবর্তন এনেছেন। এটিকে আমরা হারাতে চাই না।
বর্তমানে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সবাই স্বাধীন উল্লেখ করে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, আগের মতো কোনো ভাই, দল বা প্রভাব নেই যেখানে তার সড়ক অথবা তার বাড়িতে আগে কাজ করে দিতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রয়োজন বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুর্গতদের জন্য কাজ করতে হবে। মন্ত্রী এলে চাদর বিছিয়ে, ফুল নিয়ে বসে থাকতে হবে এমন কিছুও এখন আর নেই। আমরা এখন স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন। মর্যাদার সঙ্গে জীবন পরিচালনা করতে হবে। মেধাকে কাজে লাগিয়ে সমন্বয় করতে হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের মালিক হলে কোনো শক্তি টিকে থাকতে পারে না। ৭১-এ আমরা এমন একটি সুযোগ পেলেও সেটি হারিয়েছি। এবারের সুযোগ হারাতে চাই না। এখন আপনাদের কাছে প্রযুক্তি, তারুণ্য ও মস্তিষ্কে বিচিত্র রকমের বুদ্ধি আছে। এ সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য সেগুলোকে সন্নিবেশিত করতে হবে।
প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় মাঠ পর্যায়ের তিনদিন ধরে ঘুরে চিত্র দেখে বাস্তবতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করছি। এতে প্রধান উপদেষ্টারও নির্দেশনা আছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের জীবনটি মর্যাদাপূর্ণ করতে চাই। অমর্যাদাপূর্ণ দাসত্বের জায়গায় আর ফিরে যেতে চাই না। দেশ সংস্কারের চেষ্টা চলছে। তবে একদিনে সেটি সম্ভব না। কোনো ক্ষেত্রে বৈষম্য বিরাজ করবে না। সরকার আর রাষ্ট্র কখনো একাকার হয়ে যাবে না৷
বাংলাদেশ মোটেও দরিদ্র নয় মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মতো এমন আর কোনো দেশই হয় না। আমাদের মানবচেতনার ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে এটি একটি দরিদ্র দেশ। কিন্তু আমরা মোটেও দরিদ্র না। আমাদের ছেলেরা বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করছেন। তারা দেশে কর্ম পরিবেশ পাননি বলে দেশত্যাগ করেছেন। এই ছেলেরা এখন আবার দেশে ফিরে আসবেন।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, কুমিল্লা সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং ইউনিসেফের চট্টগ্রাম ফিল্ড অফিসের চিফ মাধুরী ব্যানার্জি। এতে সভাপতিত্ব করেন ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার।