আশুলিয়ায় উৎপাদনে ফিরেছে অধিকাংশ কারখানা
হাজিরা বোনাস বৃদ্ধিসহ শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি পূরণের যৌথ ঘোষণা পর স্বস্তি ফিরেছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায়। উৎপাদনের ফিরেছে সিংহভাগ কারখানা। তবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, পর্যালোচনায় থাকা ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ এবং ১৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের দাবি তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন নিয়ে দুই-একটি কারখানায় অসন্তোষ চলছে। বিষয়টিকে শিল্পাঞ্চলের জন্য স্বাভাবিক ঘটনা বলেই মনে করছে শিল্প পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ীর গ্রীন লাইফ দুই হাজার ৬০০ শ্রমিক দাবি আদায়ের কর্মবিরতি শুরু করেন। একই দাবিতে জামগড়ার ফ্যাশন ফোরামের সাড়ে চার হাজার শ্রমিক কর্মবিরতিতে রয়েছেন।
এ ছাড়া শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে অধিকাংশ কারখানা। শিল্পাঞ্চলে এক হাজার ৮৬৩টি তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে এক হাজার ৬৭৭টি কারখানা।
শ্রমিক আন্দোলনসহ নানা কারণে ১৩(১) ধারায় আটটি কারখানা বন্ধ রয়েছে। ‘কাজ নেই মজুরিও নেই’ নীতিতে এসব কারখানার শ্রমিকরা কোনো বেতন-ভাতা পাবেন না। এ ছাড়া সাধারণ ছুটি ঘোষণায় থাকা ৯টিসহ শিল্পাঞ্চলে ১৮৬টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এসব কারখানায় কাজ করেন কয়েক হাজার শ্রমিক। সংকট কাটিয়ে কবে নাগাদ খুলে দেওয়া হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশ আশুলিয়া জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম। যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে শিল্পাঞ্চল ঘিরে রয়েছে যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে পুলিশ, আর্মড পুলিশ, শিল্প পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও সেনা সদস্যদের তৎপরতা।
আশুলিয়ার অনন্ত গার্মেন্টস ও অনন্ত স্পোর্টস ওয়্যার কারখানার ১২০ শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্তের নোটিশ বুধবার কারখানার মূল ফোটোকে টাঙিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলোর মধ্যে বিরাজ করে চাপা উত্তেজনা। ওই শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কারখানায় হামলা-ভাঙচুরের মতো বেশকিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
শ্রমিকরা বলছেন, ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নামার কারণেই বেছে বেছে তাদেরকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, যৌথ ঘোষণায় শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হবে না মর্মে সিদ্ধান্ত নেবার পরও তা না মানা দুঃখজনক।
তবে অনন্ত কোম্পানিদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক খান শ্রমিকদের এই দাবি অস্বীকার করে বলেছেন, গত প্রায় তিন সপ্তাহ শ্রমিকরা হাজিরা দিয়ে কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন করায় ৭০ কোটি টাকার মতো লোকসান হয়েছে। ওই শ্রমিকদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলে তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।