শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের দাবি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির
অন্তর্বর্তীসরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সমর্থন জানিয়ে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের প্রত্যাশা, রাষ্ট্র সংস্কার করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দেবে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার’ করার দাবিও জানান দলটির নেতারা।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বেবী নাজনীন, কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ, মিজানুর রহমান ভূইয়া মিল্টন, ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির সভাপতি ও দলের চেয়ারপারসনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির বিশেষ সহকারী বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু, ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ফ্লোরিডা থেকে অভিনন্দন জানাতে আসেন ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইমরানুল হক চাকলাদার, সেলিম রেজা ও বিএনপির চেয়ারপারসনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য গোলাম ফারুক শাহীন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে যখন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভাষণ দেন, তখন সদর দপ্তরের বাইরে তার সমর্থনে সমাবেশ করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতাকর্মীরা। তারা ড. ইউনূসের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। দেশের তরুণ সমাজকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের হাত থেকে বাংলাদেশ বাঁচানোর জন্য ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান তারা।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বেবী নাজনীন বলেন, ‘আমরা আশা করি, সমস্ত রাষ্ট্রপ্রধানরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে সাড়া দেবে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে নিশ্চয়ই এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিক রাখবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি যৌক্তিক সময়ে সংস্কারগুলো করবেন এবং যৌক্তিক সময়ে বাংলাদেশের মানুষের যে দাবি গণতন্ত্র ভোটের অধিকার সেটি ফিরিয়ে দেবেন।’
বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ‘প্রত্যেকটা দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান সেখানে অবস্থান করছিলেন, এর মধ্যদিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন তিনি শুধু বাংলাদেশের নেতা নন তিনি একজন বিশ্বনেতা। আমরা গর্বিত তার মতো একজন সরকারপ্রধান পেয়ে।’
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভুইয়া মিল্টন বলেন, ‘ড. ইউনূসের সফর বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশকে আরও উঁচু স্তরে নিয়ে গেছেন। আমরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে লাল কার্ড দেখিয়েছি।’
ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইমরানুল হক চাকলাদার বলেন, ‘সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুততম সময়ে দেশে নির্বাচন দেবেন, এটাই তাদের প্রত্যাশা। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। যাতে আগামী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি যৌক্তিক সময়ে সংস্কারগুলো করবেন এবং যৌক্তিক সময়ে বাংলাদেশের মানুষের যে দাবি, গণতন্ত্র ভোটের অধিকার সেটি ফিরিয়ে দেবেন।’
ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির সভাপতি বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু বলেন, ‘আমরা অন্তর্বতী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসকে স্বাগত জানাতে এসেছিলাম। আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছিলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হবেই। অনেকে সেসময় হেসেছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কারণ তারেক রহমান মানুষের মনের ভাষা বোঝেন। তিনি জনগণের কথা উপলব্ধি করেন। শেখ হাসিনা যে গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু করেছিলেন আমরা সেটির পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা চাই, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। যেখানে মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নিজের পছন্দের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। এই প্রত্যাশাই আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে করি।’