ভয়াবহ কেলেঙ্কারি ফাঁস, কোটি টাকার বিনিময়ে ডিসি নিয়োগ!
সম্প্রতি আওয়ামীপন্থি হিসেবে পরিচিত ৫৬ জনকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে ১০ কোটি টাকা লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে খোদ জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মোখলেসুর রহমান ও যুগ্ম সচিব জিয়াউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে প্রতিবেশী দেশের চাহিদা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে আরও ২০০ কোটি টাকার প্রস্তাব এসেছিল। প্রথম ধাপে পাঁচ কোটি টাকা সচিব মোখলেসুরের কাছে এবং পরবর্তীতে আরও কয়েকজনকে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
১৯৮৮ সালে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে নিয়োগ পান ড. মো. মোখলেসুর রহমান। ছাত্র-জনতার হাত ধরে পটপরিবর্তনের পর ২৮ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পান সিনিয়র সচিব হিসেবে। যোগদানের মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ডিসি নিয়োগ নিয়ে বড় ধরনের অবৈধ লেনদেনের প্রস্তাব দেন যুগ্ম সচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ।
জনপ্রশাসনের সরকারি নিয়োগ নথি অনুসারে, সিনিয়র সচিব মোখলেসুর রহমান ও যুগ্ম সচিব জিয়াউদ্দিনের কথোপকথন থেকে দেখা যায়, যেখানে রাত ৯টা ৩ মিনিটে জিয়াউদ্দিন সিনিয়র সচিবকে শুভেচ্ছা জানান। সিনিয়র সচিব মোখলেসুর রহমানকে পরের দিন ৩০ আগস্ট পাঁচ কোটি টাকা চাইতে দেখা যায়। বিপরীতে যুগ্ম সচিব তাকে ১০ কোটি টাকা ম্যানেজ করে দেওয়ার কথা বলেন। সেখানে টাকা লেনদেনের আগে গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে ডলারে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেন। জবাবে জিয়াউদ্দিন বলেন, গোয়েন্দারা দুর্বল হয়ে গেছে।
এই লেনদেনের কথা অবশ্য অস্বীকার করেছেন যুগ্ম সচিব জিয়াউদ্দিন। তিনি বলেন, এমন কোনো কথোপকথনে তিনি জড়িত নন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সিনিয়র সচিব মোখলেসুর রহমানের দপ্তরে অনেকবার কথা বলার চেষ্টা হলেও তিনি রাজি হননি। পরে মোবাইলে তিনি জানান, এ বিষয়টি ‘ডেথ কেস’। এ নিয়ে আর কথা বলতে রাজি নন তিনি।
তবে কথোপকথনে জিও রেডি করে রাত বা সকালে গোপনে দেখা করতে বলা হয়। যেখানে ৫০ থেকে ৫২ জনকে প্রতিবেশী দেশের লিস্ট থেকে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়। এজন্য ২০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কথোপকথনের প্রতিশ্রুতি অনুসারে ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের নিয়োগ দিতে দেখা যায়। যাদের নিয়ে একাধিক পত্রিকা জানায়, তারা চিহ্নিত স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত এবং তাদের সহযোগী। কথোপকথনের প্রতিশ্রুতি অনুসারে, তিনজনকে নিয়োগ দেওয়া হয় বঞ্চিতদের থেকে। ১ সেপ্টেম্বর পাঁচ কোটি টাকা পেমেন্টের খবর জানায় জিয়াউদ্দিন।