আমরা চাই গণমাধ্যম স্বাধীন ও মুক্ত থাকবে : তথ্য উপদেষ্টা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন ও সফল হন। ২০২৪ সালে তাঁর নাম ‘টাইম ১০০ নেক্সট’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। চাকরির কোটা আন্দোলন থেকে এক দফার আন্দোলন এবং সেই আন্দোলনে স্বৈরশাসকের বিদায় ও পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন; এসব বিষয় নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন মো. নাহিদ ইসলাম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের সিনিয়র করেসপনডেন্ট এম এ নোমান।
দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে প্রাণ খুলে কথা বলতে পারেনি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল নিয়ন্ত্রিত। আমরা যে কথা বলতে পারতাম না, এখন যে পারছি—এই গুণগত পরিবর্তনের জন্য এক ধরনের সামাজিক প্রেক্ষাপট আপনারা তৈরি করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে আপনার অনুভূতি কী?
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : দেশে একটা আন্দোলন হয়েছে। আবু সাঈদসহ অনেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন। প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। জনগণই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—বাংলাদেশ যেভাবে চলেছে, এভাবে চলতে পারে না, চলতে দেওয়া যায় না। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। আমরা বলছি, এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। জনগণ আর অবরুদ্ধ থাকতে চায়নি। দাস হয়ে থাকতে চায়নি। তারা স্বাধীনতার জন্য আবার লড়াই করেছে। ফলে আমরা বলছি, জনগণের আত্মত্যাগের মাধ্যমে যে স্বাধীন ও মুক্ত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, দেশের মানুষ এর সুফল ভোগ করছে, স্বাধীনভাবে কথা বলছে ও মতপ্রকাশ করছে।
বর্তমান সরকারের কাছে জনগণের বিপুল প্রত্যাশা। আপনারা দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হতে চলেছে। আপনাদের সামনে এখন প্রধান প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী?
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ প্রশাসন সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। পুলিশকে এই অভ্যুত্থানের বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছিল বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার। ফলে পুলিশ বাহিনীর ইমেজে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের পক্ষে মনোবল নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। এতে পুলিশেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছি। পুলিশ আবার পূর্ণ মনোবল নিয়ে দায়িত্ব পালনে কাজ করে যাচ্ছে। প্রশাসনেও যেহেতু গত সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট রেজিম ছিল। ফ্যাসিস্ট রেজিমের স্বভাব হলো ঐ রেজিমে থাকতে হলে সবসময় তার গুনগান গাইতে হয়। তার দলদাস হয়ে থাকতে হয়। এই প্রশাসনে আসলে দলীয়করণ হয়েছে। যারা নিয়োগ পেয়েছে বা গুরুত্বপূর্ণ পদে যেতে চেয়েছে, তাদেরকে পদলেহন করতে হয়েছে। ফলে এক ধরনের অসহযোগিতা আছে। আর আমরা সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে চাই। এটা একটা চ্যালেঞ্জ। তবে জনগণের সমর্থন ও রাজনৈতিক ঐক্য আছে। আমরা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারব।
গত সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিজমের সবচেয়ে বড় শিকার ছিল গণমাধ্যম। গণমাধ্যমকে স্বাধীন সত্তা নিয়ে এগিয়ে যেতে আপনাদের পদক্ষেপ কেমন হবে?
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : ফ্যাসিস্ট রেজিমে যারা জনগণের পক্ষে কথা বলতে চেয়েছে, তাদের কণ্ঠ রোধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেক গণমাধ্যম সরকারের হয়ে কাজ করেছে। এখন অবশ্য এসব বললে তারা রাগ করে। একটা প্রোগ্রামে বলেছিলাম, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ‘শাটডাউনের’ সময় আমাদের কিছু প্রচার করেনি। শুধু এটা বলার কারণে অনেকে রাগ করেছে, কিন্তু এটা সত্য। জনগণ এটা দেখেছে। কয়েকদিন আগের ঘটনা এটা। আমরা ভুলব কীভাবে? এর দায় আসলে কে নেবে? তারা বলবে ডিজিএফআই বলেছে। আমি তখন বলেছি, আপনারা রেজিস্ট কতটা করেছেন। আমরা তো রেজিস্ট দেখি নাই।
আমরা এখানেই সংস্কারের কথা ভাবছি। যাতে যে সরকারই থাকুক না কেন, তাদের কথা বলার জায়গাটা নিশ্চিত থাকে। অনেক আইনি বেড়াজালে যেন জড়িয়ে না ফেলি। সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা তথ্য, গুজব আমরা যেন রোধ করতে পারি, সেটা কোন প্রক্রিয়ায় আমরা রোধ করব, সে বিষয় নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। আমরা চাই, গণমাধ্যম মুক্ত ও স্বাধীন থাকবে। সেজন্য সাংবাদিকদেরও পেশাদারত্বের জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশে গণমাধ্যমকে প্রতিষ্ঠান আকারে দাঁড়াতে হবে।
প্রপাগান্ডা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দুটি ভিন্ন জিনিস। জবাবদিহিতা থাকতে হবে এবং ভুল তথ্য ছড়ানোর সুযোগ নেই। এটা যেন বিবেচনায় থাকে।
কালাকানুন নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন? যেগুলোর কারণে সাংবাদিকরা নানাভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল বা সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ধরনের আরও যেসব আইন আছে, সেগুলোও পর্যালোচনা হচ্ছে। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে আরও কিছু আইন করার কথা ছিল। যেগুলো গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ব্যাহত করে, বর্তমান সরকার সেগুলো বাতিল করে দেবে।
দেশের গণমানুষের স্বস্তি ও সাবলীল জীবন-যাপনের জন্য আপনাদের সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে? বিশেষ করে নিত্যপণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : জিনিসপত্রের দামের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটগুলো আমাদেরকে ভাঙতে হবে এবং সেই কাজ চলছে। আশা করছি, দ্রুতই পুরো ব্যবস্থা আমাদের আয়ত্তে আসবে। খুব অল্প সময়ে ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার সুযোগ কম। তবে সরকারের প্রচুর শূন্যপদ আছে। সেগুলোতে আমরা দ্রুত নিয়োগ দেবো। পুলিশসহ অনেকগুলো খাত আছে, সেগুলোতেও দ্রুত নিয়োগ হবে। তাছাড়া আমার আইসিটি সেক্টরেও কর্মসংস্থানের কথা ভাবছি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলছি। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা উৎসাহিত করছি। চেষ্টা করছি, ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (বৈদেশিক বিনিয়োগ) বাংলাদেশে যত বেশি বৃদ্ধি করা যায়। তাদের জন্য একটি বিজনেস ফ্রেন্ডলি (ব্যবসাবান্ধব) পরিবেশ তৈরি করা যায়, সে বিষয়গুলো আমরা নিশ্চিত করছি।
বিভিন্ন মহল থেকে অনেক ধরনের ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে। এগুলো নিয়ে আপনাদের সরকার কী ভাবছে?
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : বর্তমান সরকার একটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত হয়েছে। অভ্যুত্থান এখনও জীবন্ত। কারও এই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস নেই। ফলে যেটা হচ্ছে সরকারকে নানাভাবে ব্যর্থ প্রমাণের একটা চেষ্টা থাকবে, যেন সরকার তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারে। ফলে গণমাধ্যমের কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, সরকারের সমালোচনা করার জন্য আমরা উৎসাহিত করছি। যেহেতু নতুন সরকার। আমাদেরও ভুল হতে পারে। গণমাধ্যমের সমালোচনার কারণে ভুল শুধরে নিচ্ছি। কিন্তু সরকারের সমালোচনা করা এক জিনিস আর ফ্যাসিস্ট রেজিমের পক্ষে থাকা আরেক জিনিস। এ বিষয়টা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলা না। যারা ফ্যাসিস্ট রেজিমের পক্ষে দাঁড়িয়েছে; তাদের পক্ষে অবস্থান নিলে সেটা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বলে বিবেচিত হবে না। সেটুকু বাদ দিয়ে যেকোনো ধরনের সমালোচনা করতে পারে। বিগত রেজিমের যে দুর্নীতি লুটপাট যা আমরা এখনও জানি না, তা জনগণের সামনে তুলে ধরুক। প্রায় ১৬ বছর তারা যে কাজ করতে পারেনি, তা এখন করুন। যে নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, এখানে তারা নিজেরা ভাবুক সামনের দিকে তারা কীভাবে একটি স্বাধীন গণমাধ্যম তৈরি করব।
টাইম ম্যাগাজিন আপনাকে নিয়ে কাভার স্টোরি করেছে। আপনার এই অর্জন কীভাবে ভবিষ্যতে দেশের জন্য কাজে লাগাবেন।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : টাইম ম্যাগাজিনে যেটা এসেছে, এটা আমার ব্যক্তিগত কোনো অর্জন না। বরং আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের যে অভ্যুত্থান, এটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ফলে আমাদের ছাত্র-জনতার নেতৃত্বের আন্দোলনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যে অভ্যুত্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করাই আমাদের সবার লক্ষ্য। সে উদ্দেশ্যেই আমরা কাজ করছি। আন্দোলনে যারা আহত ও শহীদ হয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। যারা ফ্যাসিস্ট রেজিমের সঙ্গে ছিল, তাদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, এটা আমাদের ব্যর্থতা। অনেকেই সরকার গঠনের তিন দিন আগে পালিয়ে গেছে। তারপর এখনও যারা দেশে আছে, তাদের আমরা গ্রেপ্তার করছি। দুর্নীতিবাজ মাফিয়ায়দের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হচ্ছে এবং দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে। পাশাপাশি রাষ্ট্র সংস্কারে কমিশন হয়েছে। সে কমিশনগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কার করা হবে।
আন্দোলন যখন শুরু করেছিলেন, তখন এত বড় সফলতায় পৌঁছাবেন, এমনটি কি কল্পনায় ছিল?
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : আন্দোলন আমরা শুরু করেছিলাম, কোটা সংস্কারের। কারও কারও মনে হয়তো ছিল। তবে আমরা সামগ্রিকভাবে সে বক্তব্য দেইনি। ফলে আমরা তা ক্লেইম করতে যাব না। আমরা মনে করি, এটাই আন্দোলনের ইতিহাস। আমরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্য নেমেছিলাম, তা না করে সরকার দমন-পীড়ন করেছে, খুন করেছে, ফলে জনগণ নেমে এসেছে। আমরা এটাকে জনগণের মুক্তির আন্দোলনে রূপ দিয়েছি।
আন্দোলনের সময় কখনও কি মনে কোনো ধরনের হতাশা কাজ করেছে?
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : হতাশা তো কাজ করতোই। আমরা অনেকবারই ভেবেছি আন্দোলন হয়তো শেষ। শেষ হয়ে যাবে। অনেকগুলো ব্যারিকেড আমাদের পার করতে হয়েছে। যেদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়, সেদিন আমাদের মনে হয়েছে আন্দোলন বোধহয় শেষ। যেদিন আমাদের গুম করা হয়েছে সেদিনও। আন্দোলন এখানেই শেষ। যখন জোর করে বিবৃতি পাঠ করানো হয়েছে, তখন আমরা চূড়ান্তভাবেই হাল ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু জনগণ আমদেরকে সাহস দিয়েছে, আন্দোলনকে উজ্জীবীত করেছে। ফলে আমরাও সেই সাহসী ভূমিকায় থেকে তাদের নেতৃত্ব দিয়েছি। হতাশা ছিল, বাধা ছিল, স্বপ্নও ছিল। উদ্যমও ছিল। সব মিলিয়ে আসলে সফলতা এসেছে।
ডিবি অফিসে আটককালীন বিশেষ অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু বলবেন কি?
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : ডিবি অফিসে হারুন সাহেবের সঙ্গে যখন আমাদের কথা হয়, সে একটা কথাই বলতো, আমি নেতা বড় করি না, আমি নেতা ছোট করি। আমি কাউকে নেতা বানাই না। তোমাদের মামলা দিয়ে হিরো বানাব, তা ভেবো না। সে তার লাস্ট গেমে হেরে গিয়েছে। সে ভেবেছে খাওয়ার ছবি দিয়ে সে জিতে যাবে। আন্দোলন দমনের ক্রেডিট সে নিতে পারবে।
আপনারা এখন বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন?
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা : আমাদের আন্দোলন ৩৬ দিনের। খুব যে আমরা স্বপ্ন দেখে আন্দোলন করতে পেরেছি, এরকমটা ঠিক না। আন্দোলনটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও শুরু হয়নি। কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল। হয়তো আমরা যারা ছিলাম, তাদের একটি রাজনৈতিক পরিচয় ছিল। এই যে কর্মসংস্থান নেই, এখান থেকেই তো চাকরির আন্দোলন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি, বাকস্বাধীনতা নেই। আরেকটা নির্বাচন হলো যেখানে কেউ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। সামগ্রিক পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করার একটা জায়গা খুঁজছিল। কর্মসংস্থানের বিষয়টি তরুণদের অনেক বেশি ট্রিগার করেছে। ফলে তারা কোটা সংস্কারের জন্য নেমেছে এবং তাদের ওপর যখন দমন-পীড়ন শুরু হলো, তখন সারা দেশের মানুষ সমর্থন দিয়ে রাজপথে নেমেছে। একটা ডু অর ডাই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ফলে এই অভ্যুত্থান আসলে সমাজকে পরিবর্তন করেছে, মানুষকে পরিবর্তন করেছে। কোনো স্বপ্নকে সামনে রেখে অভ্যুত্থান হয়নি। অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে নতুন সমাজের স্বপ্ন আমরা দেখছি। নতুন আকাঙ্ক্ষা আমরা তৈরি করছি। যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ এই পুরো আন্দোলনের মূল বিষয়, আমরা তা গঠন করতে চাই। সমাজে ন্যায়বিচার থাকবে, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা থাকবে এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দিকে আমরা যেতে চাই। যেহেতু আগের সব পলিটিক্যাল সিস্টেমে আমরা দেখেছি, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ফ্যাসিজম বারবার আসছে। স্বৈরতন্ত্র বারবার এসেছে। ফলে আমরা এমন একটা বাংলাদেশ চাই, যেখানে আর কখনো স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসতে পারবে না। ন্যায়বিচার থাকবে, মানুষের জীবনের মানোন্নতি হবে। কর্মসংস্থান থাকবে। এই হত্যাকাণ্ডের যে বিচার তা দ্রুত সময়ের মধ্যে হবে। মানুষের কিছু সহজ সহজ প্রত্যাশা আছে। সুতরাং, আমাদের কাজ হচ্ছে সে আকাঙ্ক্ষাগুলো পূরণ করা।