জাতীয় নিরাপত্তা ও অখণ্ডতা রক্ষায় সজাগ সেনাবাহিনী
সেনা সদর দপ্তরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরের স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সেনাবাহিনী অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সজাগ রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত নৈরাজ্য রোধ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং বিদেশি কূটনীতিক ও দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি।’
ইন্তেখাব হায়দার আরও বলেন, তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই) এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অফিস রক্ষা, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের পাশাপাশি প্রধান সড়কগুলোকে যানজটমুক্ত রাখতে এবং মাদক ব্যবসায়ী, নৈরাজ্য উসকে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে।
সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং কক্সবাজার জেলার এফডিএমএন (জোর করে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক) ক্যাম্প এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এর বাইরে কল-কারখানার কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন করতে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, ২৯ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত সেনাবাহিনী ২৮টি অবৈধ অস্ত্র ও ৪২৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। তারা মোট ৬৭টি অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং শিল্পাঞ্চলে ১৩টি সড়ক অবরোধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা সারাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে অপ্রীতিকর ঘটনাসহ ৪৫টি সমস্যা সমাধান করেছে। এ ছাড়া সমাবেশস্থল থেকে তারা ৯২ শিশু ও ৬৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে।
সেনা কর্মকর্তা ইন্তেখাব হায়দার বলেন, সেনাবাহিনী বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে এক হাজার ৪০৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাদক সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মাদকদ্রব্যও উদ্ধার করা হয়েছে।
ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, ‘বড়দিনসহ প্রধান ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’
ইন্তেখাব হায়দার আরও বলেন, সেনাবাহিনী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত বেসামরিক নাগরিকদের চিকিৎসা সহায়তাও দিচ্ছে। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মোট ৩ হাজার ৫৮৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৬ জন এখনও সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ছাড়া শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন ১০ ডিসেম্বর থেকে সিএমএইচে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।