গাড়ি চালিয়ে মাকে হাসপাতালে নিলেন তারেক রহমান
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছান আজ। বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও নাতনি জাইমা রহমান তাঁকে স্বাগত জানান। সঙ্গে ছিলেন দলটির নেতাকর্মীরা। এসময় এক আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে লন্ডন ক্লিনিকের উদ্দেশে ছেড়েছে গাড়িবহর। বেগম খালেদা জিয়া যে গাড়িতে আছেন, সেটার ড্রাইভিং সিটে তারেক রহমান। পাশে স্ত্রী জুবাইদা রহমান। পেছনের সিটে মা বেগম খালেদা জিয়া। গাড়ি চলছে ধীর গতিতে। কারণ আশপাশে নেতাকর্মীদের ভিড়।
বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে পৌঁছান আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে (বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টার দিকে)। তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রকাশ করা আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জড়িয়ে ধরেছেন তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখান থেকে বেড় হয়েই গাড়িতে করে লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে।
এর আগে বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় কাতারের দোহা বিমানবন্দরে পৌঁছায় খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। সেখানে আড়াই ঘণ্টা বিরতির পর এটি লন্ডনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বাংলাদেশ সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকা হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে রওনা হন বিএনপি প্রধান। এর আগে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর রাজধানীর গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডের বাসভবন ফিরোজা থেকে যাত্রা শুরু করে। রাস্তায় দুই ধারে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ দুহাত তুলে তাকে বিদায় জানান। রাত ১০টা ৫০ মিনিটে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এ সফরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন চিকিৎসক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ১৬ জন। এরমধ্যে চারজন চিকিৎসক ও প্যারামেডিকসরা রয়েছেন। এরা হলেন—অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিক, অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন। এ ছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ও খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারসহ ব্যক্তিগত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তার লিভার প্রতিস্থাপন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, লিভার প্রতিস্থাপনের পর পুরো চিকিৎসায় কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার আগে রাজনীতিতে চলার পথের দীর্ঘদিনের সারথি—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সব সদস্যদের তার বাসায় ডেকে খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘গণতন্ত্রই শেষ কথা।’ এ সময় তিনি দলের নীতিনির্ধারকদের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ঐক্যবদ্ধ থেকে জনগণ ও গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেন। দেন ঐক্যের বার্তা। বর্তমানে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের স্বার্থে বিএনপির পক্ষ থেকে দ্রুত নির্বাচনের যে দাবি করা হচ্ছে, তার সঙ্গেও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন তিনি।