গুলশানে বিলাসবহুল ভবনের মালিকের তালিকায় টিউলিপের নাম
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/09/ttiulip_thaam.jpg)
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের নাম রাজধানী ঢাকার একটি বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দার তালিকায় পাওয়া গেছে। ১০ তলা ওই ভবনের একটি ব্লকের মালিকানা তাঁর পরিবারের নামে তালিকাভুক্ত ছিল।
গতকাল শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।
ঢাকার কর্মকর্তাদের ধারণা করছেন ‘সিদ্দিকস’ নামে ঢাকার এই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স ২০১৪ সালে টিউলিপের ‘স্থায়ী ঠিকানা’ ছিল। তখন তিনি যুক্তরাজ্যের উত্তর লন্ডনের ক্যামডেনের কাউন্সিলর ছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিকের গুলশানের এই সম্পত্তির পাশে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আদালতের কাগজপত্র এবং সংবাদ প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা গেছে এটি বাংলাদেশে টিউলিপের পঞ্চম সম্পত্তি।
তবে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সূত্র জানিয়েছে বাংলাদেশে টিউলিপের কোনো সম্পত্তি নেই। তাই গুলশানে মালিকানাধীন সম্পত্তির ব্যাপারে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের প্রায় এক মাস পর টিউলিপ সিদ্দিক এখনো সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়সহ বাংলাদেশে তাঁর খালা শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সঙ্গে যোগসূত্র নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে যুক্ত একজন ব্যক্তির থেকে টিউলিপ উপহার পাওয়া একটি ফ্ল্যাটের ব্যাপারে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করেছেন, এমন তথ্য যখন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর নীতিশাস্ত্র উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস জানতে পারেন তখন তিনি তদন্ত করেন। এ তদন্তের পর টিউলিপ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
টিউলিপ যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রীর দায়িত্বে ছাড়াও দুর্নীতিবিরোধী লড়াই করা ছিল তাঁর দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত।
বাংলাদেশের দীর্ঘতম ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ৭৭ বছর বয়সী শেখ হাসিনা এখন ভারতে আছেন। গত আগস্টে বিক্ষোভে নৃশংসতার পর তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। ওই সময় প্রায় এক হাজার ৫০০ জন মানুষ নিহত হন।
অভিযোগ রয়েছে তার শাসনামলে সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বিরোধীদের আক্রমণ, গ্রেপ্তার এবং গোপনে কারাদণ্ড দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছিল।
দ্য টেলিগ্রাফ প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন গাজীপুরের কানাইয়া এলাকায় ‘টিউলিপস টেরিটরি’ নামের প্লটসহ একটি পারিবারিক অবকাশযাপনের বাগানবাড়ি নিয়ে তদন্ত করছে। এ তথ্য সামনে আসার পর দেশে টিউলিপের পঞ্চম সম্পত্তি গুলশানের আবাসিক ভবনের সঙ্গে যোগসূত্রের তথ্য জানা গেছে।
একটি সরকারি নথিতে দেখা গেছে, গুলশানের সম্পত্তিটি টিউলিপের ‘বর্তমান’ এবং ‘স্থায়ী’ উভয় ঠিকানা হিসেবেই বিবেচিত হয়েছিল। ২০১৪ সালের মে মাসে টিউলিপ লন্ডনের ক্যামডেনের কাউন্সিলর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। নথিটিতে এর তিন সপ্তাহ পরের তারিখ লেখা।
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/02/09/ttiulip_inaar.jpg)
রাজধানীর অভিজাত গুলশান এলাকার ১০তলা অ্যাপার্টমেন্ট ভবনটি ২০১০ সালের দিকে নির্মিত হয়েছিল। একটি প্রচারমূলক ভিডিওর তথ্য অনুসারে ভবনে একটি খোলা ছাদ, একাধিক বারান্দাযুক্ত দুই ও তিন শয়নকক্ষ আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর একটি। এ শহরে ২০ মিলিয়নের বেশি মানুষ বসবাস করে। ঢাকার বেশির ভাগ অধিবাসী যে পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করেন, তার বিপরীত চিত্র এসব প্রশস্ত ফ্ল্যাট।
ভবনটি টিউলিপের বাবা শফিক আহমেদ সিদ্দিক, টিউলিপের দাদা নাকি পুরো পরিবারের নামে, তা স্পষ্ট নয়।
সম্পত্তিটি সম্পর্কে জানেন এমন এক ব্যক্তি ধারণা করেন, টিউলিপের পরিবারের এক সদস্যের মালিকানাধীন জমিতে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু এই ভবনের কোনো ফ্ল্যাট এখনো এ পরিবারের মালিকানায় আছে কি না কিংবা এটি কার নামে নামকরণ করা আছে, সে প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।