জাবি ছাত্রদলের কমিটিতে ১৩ ছাত্রলীগকর্মী!
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/12/ju_news_pic.jpg)
দীর্ঘ নয় বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের ১৭৭ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে গত ৮ জানুয়ারি। এতে পদায়ন করা হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জাবি শাখার ১৩ নেতাকর্মীকে।
ছাত্রলীগ থেকে শাখা ছাত্রদলে পদপ্রাপ্ত এসব নেতাকর্মীর তথ্য প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এই নেতাকর্মীরা হলেন কমিটির ২৭ নং যুগ্ম আহ্বায়ক রিফাত আকন্দ অন্তর, ৪৪ নং যুগ্ম আহ্বায়ক চঞ্চল কুমার দাশ, ১০ নং সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, ১১ নং সদস্য হারুনুর রশিদ, ১৬ নং সদস্য সাদিকুল ইসলাম শুভ, ১৮ নং সদস্য রায়হান পারভেজ , ২৮ নং সদস্য জোবায়ের হাসান রিফাত, ২৯ নং সদস্য গোলাম রব্বানী অর্নব (ফুচকার দোকানে চাঁদাবাজির দায়ে সদ্য বহিষ্কৃত), ৪৮ নং সদস্য রিহাব হোসেন, ৭৩ নং সদস্য খন্দকার সাকিব আঞ্জুম শারফি, ৭৭ নং সদস্য এস এম শাহরিয়ার হামজা শ্রেষ্ঠ, ৭৮ নং সদস্য তাসলীম খান বাপ্পী ও ১০৩ নং সদস্য নাসির উদ্দীন মিয়া।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়, এদের মধ্যে রিফাত আকন্দ অন্তর ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও তাঁর ছোট ভাই জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার তালিকায় ১ নম্বর আসামি আরমান খান যুবর বোনের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। চঞ্চল কুমার দাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ছাত্রলীগের ব্লকে ছিলেন। মোস্তাফিজুর রহমান বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটূক্তি করে পোস্ট করেছিলেন। হারুনুর রশিদ শাখা ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন। সাদিকুল ইসলাম শুভ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের ব্লকে ছিলেন এবং শিক্ষার্থী নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত। রায়হান পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে ক্যান্টিনে বাকি খাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জোবায়ের হাসান রিফাতকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনকে ফুল দিয়ে বরণ করতে দেখা যায়। গোলাম রব্বানী অর্নবের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তাঁকে ফুচকার দোকানে চাঁদা দাবির অভিযোগে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। রিহাব হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন। খন্দকার সাকিব আঞ্জুম শারফি, এস এম শাহরিয়ার হামজা শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন এবং সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ক্যান্টিনে বাকি খাওয়ার অভিযোগ আছে। তসলিম খান বাপ্পী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন এবং সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করতেন।
এ বিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, ১৭৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনেককেই আমি চিনি না। বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁরা কমিটিতে এসেছেন। তবে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিল—এমন কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পেলে আমরা তাঁকে কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিব।