ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান, বৃষ্টি হলেই ছুটির ঘণ্টা

এটি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে ১০ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষা কার্যক্রম। ছুটি দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। ঝুঁকিপূর্ণ এই বিদ্যালয়টির অবস্থান গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায়।
বিদ্যালয় ভবনের বেহাল দশার কারণে যে কোনো সময়ে ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। এমন আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের ১৫১ নং বদরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত। এই বিদ্যালয়ের ৩ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণের কয়েক বছর পরেই পলেস্তারা খসে পড়তে থাকে। ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। এসব কারণে ২০১৪ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
এদিকে বিদ্যালয়ে অন্য কোনো ভবন না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন। বৃষ্টি হলে বিদ্যালয় ভবনটির ছাদ দিয়ে পানি পড়ে ভিজে যায় শিক্ষার্থীরা। এসব কারণে দিন দিন বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা কমতে থাকে।
বর্তমানে এই বিদ্যালয়টিতে ৫৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়টির চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী কৃষ্ণা বিশ্বাস বলেন, অনেক সময় বিদ্যালয়ের ছাদের পলেস্তারা খসে আমাদের গায়ে পড়ে। বৃষ্টির সময় পানিতে আমরা ভিজে যাই। এতে আমাদের লেখাপড়ায় সমস্যা হয়। বিদ্যালয়ের এই অবস্থার জন্য আমাদের অনেক সহপাঠীরা অন্য বিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছে। আমার তাড়াতাড়ি আমাদের বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন তৈরির দাবি জানাচ্ছি।
বদরতলা গ্রামের নরেশ বিশ্বাস বলেন, আমার মেয়ে ইন্দ্রানী বিশ্বাস বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। মেয়েটা স্কুলে যাওয়ার পরে কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে এ নিয়ে আমরা চিন্তায় থাকি। বৃষ্টির মৌসুমে ক্লাসে বসেই ওদের ভিজতে হয়। অনেক সময় বাধ্য হয়ে শিক্ষকদের স্কুল ছুটি দিতে হয়। আমরা বিদ্যালয়টিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।

বিদ্যালয়টির শিক্ষক বিপ্লব হাজরা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ২০১৪ সাল থেকে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসে একের পর এক চিঠি দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কোন কারণে আমাদের ভবনটি হচ্ছে না, তা আমাদের জানা নেই।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, পিডিবি-৪ এ যে সকল ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের কথা ছিল সেগুলো ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আগামী জুলাই থেকে পিডিবি-৫ এর আওতায় নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে। আশা করছি পিডিবি-৫ এর কাজ শুরু হলে প্রথম দিকেই এই বিদ্যালয়টির জন্য একটি নতুন ভবন হবে।