পোশাক নিয়ে হেনস্তা : মামলা তুলে নেওয়ার আবেদন ঢাবির সেই ছাত্রীর

পরনের পোশাক নিয়ে হেনস্তার অভিযোগের মামলা তুলে নেওয়ার আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেই ছাত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) তিনি শাহবাগ থানায় এ আবেদন করেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ মনসুর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি খালেদ মনসুর বলেন, ওই শিক্ষার্থী মামলা প্রত্যাহারের একটি আবেদন করেছেন। তবে মামলা প্রত্যাহার করার ক্ষমতা একমাত্র আদালতের।
‘হত্যা ও ধর্ষণের’ হুমকি পাওয়ায় মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন ঢাবির সেই ছাত্রী। এ ছাড়া মামলা তুলে নিতে ওই ছাত্রীকে ‘অনুরোধ বা চাপ প্রয়োগের’ অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বিরুদ্ধেও। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।
প্রক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি তথ্য ছড়িয়েছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ মামলা প্রত্যাহার করতে ওই শিক্ষার্থীকেই অনুরোধ বা চাপ প্রয়োগ করেছেন। ছড়িয়ে পড়া তথ্যটি ভুল, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ছড়ানো হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বডি বুধবার (৫ মার্চ) থেকে শিক্ষার্থীর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে হেনস্তাকারীকে তাৎক্ষণিক থানায় পাঠিয়েছে, মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।
গত বুধবার দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ওই ছাত্রী হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। এজাহারে বলা হয়, তিনি হেঁটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন। রাজু ভাস্কর্যের সামনে পৌঁছালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সহকারী বুক বাইন্ডার মোস্তফা আসিফ অর্ণব তাকে থামিয়ে ‘পর্দা’ করেননি কেন বলে প্রশ্ন করেন। ‘ওড়না ঠিক নাই’ কেন বলাসহ ‘কুরুচিপূর্ণ’ কথা বলে তাকে ‘যৌনপীড়ন’ করেন। ওই শিক্ষার্থী প্রক্টরকে ফোন করলে অর্ণব দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে অর্ণবের ছবিসহ বিষয়টি ফেসবুকে পোস্ট করেন ওই ছাত্রী। ওই ছবি দেখে অর্ণবকে শনাক্ত করা হয় এবং তাকে প্রক্টর অফিসে ডেকে নেওয়া হয়। পরে ওই ছাত্রী মামলা করেন এবং অর্ণবকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়।
অর্ণবের মুক্তির দাবিতে বুধবার মাঝরাতের পর শাহবাগ থানায় জড়ো হন একদল ব্যক্তি, যারা নিজেদের ‘তৌহিদী জনতা’ দাবি করেন। মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থানের ঘোষণা দেন। তারাই গতকাল বৃহস্পতিবার অর্ণবকে জামিনের পর ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন।