হাসিনার সম্মেলনে কোন কোন ব্যবসায়ী ছিলেন, তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করুন : মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, গত ১৭ বছরে অবৈধভাবে যেসব ব্যবসায়ীরা টাকা কামিয়েছেন, তারা দেশ ধ্বংস করতেই সেই টাকা খরচ করছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সফলতার শেষ মুহূর্তে গত বছরের ৩ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যবসায়ী সম্মেলনে কোন কোন ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন, তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, এসব ব্যবসায়ীদের অনেকের নামে হত্যা মামলা থাকলেও কেন তারা গ্রেপ্তার হচ্ছেন না? শুধু ব্যবসায়ী নয়, সচিবালয়ে খবর নেন। সেখানে আওয়ামী লীগের দোসররা এখন অবস্থান নিয়ে আছে। তাদের অনেকেই এখনও আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করার চেষ্টা করছেন।
একটি বিশেষ দলকে নিয়ে কেউ নিউজ করে না অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা শুধু বিএনপিকে নিয়ে নিউজ করেন। ওই দলকে কারা টাকা দেয়, কারা হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করে দেয় সেটিও সাংবাদিকদের জাতির সামনে প্রকাশ করার অনুরোধ করছি।
মির্জা আব্বাস বলেন, সাংবাদিকদের অবদানকে খাটো করে দেখার সুযোগ নাই। সাংবাদিকবিহীন যদি কোনো রাষ্ট্র থাকে অবশ্যই সেটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অবশ্যই স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য একটি প্লাটফর্ম থাকতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রচেষ্টা ও কার্যক্রমের বিনিময়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, সাংবাদিকদের শুধু ঘটনা নিয়েই কাজ করা নয়, তাদেরকে কোথায় কী হতে যাচ্ছে এ বিষয়েও কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগের দোসররা কে কোথায় অবস্থান করছেন? কার কী অবস্থা, কে কী করেছেন সবগুলোই বের করা সাংবাদিকদের দায়িত্ব বলে জানাচ্ছি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, একটি বিশেষ দল সম্পর্কে সাংবাদিকরা কিছু লিখছে না। যতটুকু পারেন ফুলিয়া ফাঁপিয়ে শুধু বিএনপির বিরুদ্ধে লিখছেন। পর্দার অন্তরালয়ে অনেক কিছুই ঘটছে সেগুলো কিন্তু আপনার লিখছেন না। কোন ব্যবসায়ী কোন দলকে কত টাকা দেয়, কোন দল কোন ব্যবসায়িক পৃষ্ঠপোষকতা করছে, কোন ব্যবসায়ীকে বাঁচাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন, এগুলো কিন্তু আপনারা লিখছেন না। অনেক ব্যবসায়ীর হত্যা মামলার আসামি তাদের বিরুদ্ধে লিখছেন না, এমনকি জুলাই আগস্টে হত্যাকাণ্ডের পরেও তাদের বিরুদ্ধে কেউ লিখ কিছু লিখছেন না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আমরা যেন নতুন বাংলাদেশ গড়তে গিয়ে নতুন করে কোনো ভুল না করি। ছাত্র-জনতার যে অভ্যুত্থান সেটির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ঠিক রেখেই আমাদেরকে চলতে হবে।
আব্দুল মঈন খান আরও বলেন, এখনও কেন সাংবাদিকতার বিকাশে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করা হয়নি। সাবেক একজন তথ্যমন্ত্রী হিসেবেও আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারকে জিজ্ঞাসা করতে চাই—এ আইন কার স্বার্থে এখনো বলবৎ রয়েছে?
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, দলের কঠিন দুঃসময়ে সাংবাদিকরা ছিলেন আমাদের অন্যতম ভরসা। সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য জাতি জানতে পেরেছে। আগামীতেও সবসময় সাংবাদিকদের সহযোগিতা বিএনপি পাবে বলে প্রত্যাশা করি।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ইফতার অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব ও দলের যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, মিডিয়ার সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ আলমগীর পাভেল ও সদস্য বিএনপিনেত্রী শাম্মী আক্তার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম রনি।