নদী গিলে খেয়েছে সড়ক, দুর্ভোগে ৬ গ্রামের মানুষ
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শৈলদাহ নদীর ভাঙনে সড়াবাড়ী-চিতলিয়া সড়কের প্রায় ২৫০ ফুট এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে অন্তত ১০ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চরম যোগাযোগ দুর্ভোগে পড়েছেন।
গত ৩০ এপ্রিল (বুধবার) বিকেলে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের এই সড়কটি ভেঙে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের মধ্যে রয়েছে তারাইল, জামাইবাজার, মামারবাজার, সড়াবাড়ী, চিতলিয়া ও লেবুতলা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এটি ছিল ওইসব গ্রামের মানুষের একমাত্র চলাচলের পথ। ভাঙনের ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, বন্ধ হয়ে গেছে পণ্য পরিবহণও।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত সড়ক সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন।
ডুমুরিয়া ইউনিয়নের চিতলিয়া গ্রামের সুধীর বিশ্বাস, লতা বেগম বলেন, ডুমুরিয়া-সড়াবাড়ি সড়কের চিতলিয়া গ্রামে গত বুধবার দুপুরে ফাটল ধরে। পরে সড়কটির ২৫০ ফুট শৈলদহ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তারপর থেকে এ সড়ক দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন ডুমুরিয়া, ভৈরবনগর, তাড়াইল, জামাইবাজার, মামারবাজার, চিতলিয়া, সড়াবাড়ি, পাকুরতিয়া সহ ১০ গ্রামের মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণ করতে পারছে না। তাদেরকে বাঁশবাড়িয়া হয়ে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুই বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। এ দুর্ভোগ থেকে ১০ গ্রামের মানুষকে বাঁচাতে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
একই গ্রামের রহমত মল্লিক বলেন, শৈলদহ নদী ভাঙনে গত ৩০ ডিসেম্বর এ সড়কের ব্রিজ ভেঙে যায়। তারপর ৩০ এপ্রিল সড়ক ভেঙে পড়েছে। এতে একটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই পরিবারকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা করেছে। ভাঙন কবলিত এলাকার অন্তত ২৫টি বসতবাড়ি, গাছপাল, ফসলি জমি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ইউনিয়ন পানি সরবরাহ লাইন নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই দ্রুত নদীর ভাঙন প্রতিরোধের পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে চিতলিয়া গ্রামের মানুষ সহায় সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বে। মানচিত্র থেকে চিতলিয়া গ্রাম হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি আমরা।
চিতলিয়া গ্রামের অমর বিশ্বাস বলেন, এই সড়ক দিয়ে আমরা ডুমুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও বাজারে যাতায়াত করি। সড়ক ভেঙে যাওয়ায় আমরা সহজে যাতায়াত করতে পরছি না।
শিক্ষার্থী জাহানারা খানম বলে, এ সড়ক দিয়ে আমরা ডুমুরিয়া স্কুলে যাতায়াত করি। কিন্তু সড়ক ভেঙে আমরা দুর্ভোগে পড়েছি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত লতা বেগমের পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে তার জায়গায় একটি বসতঘর করে দেওয়া হবে। এছাড়া ডুমুরিয়া ও পাটগাতী ইউনিয়নের সংযোগ সড়ক ভেঙে যাতায়াতে মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছে। নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে সড়কটিও দ্রুত সংস্কার করে দেওয়া হবে।

মাহবুব হোসেন সারমাত, গোপালগঞ্জ
মিজানুর রহমান, গোপালগঞ্জ (সদর-কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া)