বকেয়া মজুরির দাবিতে দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ চা শ্রমিকদের
দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে বকেয়া মজুরি না পাওয়ায় আন্দোলনে নেমেছেন সিলেটের চারটি চা বাগানের শ্রমিকরা। আজ রোববার (৪ মে) দুপুরে প্রায় দুই ঘণ্টা সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।
শ্রমিকদের অবরোধের কারণে আম্বরখানা-বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন এবং সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। খবর পেয়ে বিমানবন্দর থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালান।
পরে বিকেল ৩টায় জেলা প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। তবে তারা প্রশাসনকে তাদের ন্যায্য দাবি পূরণের জন্য এক সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, বুরজান চা কোম্পানির অধীন বুরজান, ছড়াগাঙ, কালাগুল ও বুরজান কারখানার শ্রমিকরা প্রায় পাঁচ মাস ধরে তাদের মজুরি পাচ্ছেন না। এর আগে জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিলেও কোনো সুফল মেলেনি। বকেয়া মজুরি ছাড়াও শ্রমিকদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে বসতবাড়ি নির্মাণ ও মেরামত, নিয়মিত চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ সরবরাহ এবং চা বাগানের গাছ কাটা ও বিক্রি বন্ধ করা।
চা শ্রমিক নেতা রিতেশ মোদি জানান, কালাগুল চা বাগানে আড়াই হাজার শ্রমিক চার দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। দীর্ঘ ২০ সপ্তাহ ধরে মজুরি ও রেশন না পাওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনের পর বাগানের লিজগ্রহীতারা শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মজুরি পরিশোধ করছেন না। ফলে বাগানগুলো অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। শ্রমিকরা এই বাগানগুলোকে সরকারিকরণের দাবি জানান।
এদিকে শ্রমিকদের অবরোধের কারণে সিলেট বিমানবন্দর সড়কের লাক্কাতুরা এলাকায় সড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) উপকমিশনার মো. সজিব খান জানান, শ্রমিকদের অবরোধের ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।