বাগেরহাটে সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে শান্তিপূর্ণ হরতাল

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে জেলা জুড়ে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হয়েছে। সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ব্যানারে পূর্ব নির্ধারিত সময় সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হরতাল ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। সারাদিন সর্বাত্মক হরতাল পালন শেষে সন্ধ্যা ৬টায় হরতাল শেষ হয়। আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা হরতাল পালনের কথা রয়েছে। দাবি না মানলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতারা।
নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এবং বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, হরতাল সফল করতে বাগেরহাট-খুলনা-পিরোজপুর মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, খুলনা-ঢাকা মহাসড়কের দশানী, নওয়াপাড়া, কাটাখালি, মোল্লাহাট সেতু, বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাজার, খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ফয়লা, মোংলা বাসস্ট্যান্ডসহ জেলার অন্তত ২০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়ক অবরোধ করা হয়। বিভিন্ন সড়কে দফায় দফায় মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
চারটি আসনের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ব্যবসায়ীরা দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন। জেলার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করেছে বলে দাবি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা মেরে দেন আন্দোলনকারীরা। পরে মিছিলসহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন হরতালকারীরা। জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসানকে অফিসে প্রবেশ করতে কিছু সময় বাধাও দেওয়া হয়।
হরতালের কারণে জেলার খুলনা-মাওয়া মহাসড়কের কাটাখালি, নওয়াপাড়া, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, আবুল খায়ের সেতু, বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ড, মাজার মোড়, সিএন্ডবি, কচুয়ার সাইনবোর্ড, বাধালসহ অন্তত ৫০টি স্থানে সড়ক বন্ধ রাখা হয়। এতে জেলা থেকে কোনো গণপরিবহন চলাচল করতে পারেনি। তবে জরুরি প্রয়োজনে মানুষকে বাড়তি ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। মোংলা বন্দরের সড়কপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলেও নদীপথে সকল যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
হরতাল নিশ্চিত করতে সারাদিন জেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান ও মিছিল করেন বিএনপির সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম. এ সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ কামরুল ইসলাম গোরা, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, জেলা জামায়াত ও সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন ছিল। ৩০ জুলাই আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি অংশ কমিয়ে তিনটি করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেয় নির্বাচন কমিশন। ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশে সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসনই জারি রাখায় বাগেরহাটবাসী আন্দোলন শুরু করে। সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাদের দাবি না মানলে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।