শাপলা প্রতীকে অনড় এনসিপি, নির্বাচনে ১৫০ আসনে জয় পাওয়ার আশা
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শাপলা প্রতীক পাওয়ার প্রত্যাশা থেকে সরছে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপি ১৫০ আসন পাবে বলেও দাবি করেন তিনি।
আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকের এসব কথা বলেন এনসিপির এই মুখ্য সমন্বয়ক।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমাদেরকে নিবন্ধন দেওয়ার যে শর্ত, সেগুলো পূরণ করেছি। নির্বাচন কমিশন আমাদের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েই গণবিজপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে। অতএব আমরা আশা করছি, এ প্রক্রিয়াটি শেষ হলেই চূড়ান্তভাবে আমরা নিবন্ধন সার্টিফিকেটটি পাব। সুখবর আসছে।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘প্রতীকের বিষয়ে আমরা আজকেও বলে আসছি—শাপলা, সাদা শাপলা ও লাল শাপলার কথা। তিনটি প্রতীকের কথা বলেছি, সেটা থেকে আমরা সরছি না। আমরা সেই জায়গাতে এখনও আছি। তবে আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ পাচ্ছি, এই প্রতীকগুলো নিয়ে তারা একটি ষড়যন্ত্রমূলক কাজের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যেটা আমরা দেশবাসীর সামনে বলতে চাই। এনসিপির নিবন্ধনে যে প্রতীক হবে, এটা অবশ্যই শাপলা, সাদা শাপলা অথবা লাল শাপলা—এই তিনটির মাধ্যমেই হতে হবে। এর ব্যত্যয় করা যাবে না। যদি করা হয়, সেক্ষেত্রে আমরা আবারও আপনাদের সামনে উপস্থিত হব।’
এনসিপিনেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা আমাদের যে সার্ভেগুলো করেছি, ১৫০টি আসনের মতো এনসিপির জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সেগুলো নিয়ে ইতোমধ্যে আমাদের জেলার সমন্বয়কারী প্রধানদের ঢাকায় ডেকেছিলাম। আমরা তাদের মাঠে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলেছি। সেখানে যারা গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলাম—আলেম সমাজের প্রার্থিতা থাকবে, আইনজীবীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন, লিগাল জায়গা থেকে তারা বাংলাদেশের পক্ষে লড়াই করেছিলেন, তাদের প্রার্থিতাও থাকবে। সাবেক সেনা কর্মকর্তা যারা আমাদের শিশুদের ওপর গুলি চালায়নি, সে সৈনিক ভাইদেরকেও আমরা পার্লামেন্টে নিতে চাচ্ছি। এই গণঅভ্যুত্থানে যে নারীরা ছিলেন, তাদেরও প্রার্থিতা থাকবে। যে সাংবাদিক ভাইয়েরা জীবন দিয়ে লড়াই করেছিলেন এই গণঅভ্যুত্থানে, তাদেরও প্রার্থিতা থাকবে। গণঅভ্যুত্থানে যে শ্রমিক, মজুর, কৃষক, আলেম, নারী এবং আমাদের যারা সৈনিক ভাইয়েরা ছিলেন, আমরা তাদেরও প্রক্রিয়াগত জায়গায় রেখেছি এবং তাদের সঙ্গেও আমাদের কথাবার্তা চলমান রয়েছে। ইনশাআল্লাহ, এই নির্বাচনে এনসিপি ১৫০টি আসন পেতে যাচ্ছে।’
বিএনপি কয়টি আসন পাবে, এমন প্রশ্নে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘ওটা তো আমি বলতে পারব না। এটা যারা ভোট দিবেন, তারা ডিসাইড করতে পারবেন। আমাদের জায়গা থেকে যারা অ্যাসেসমেন্টটা দেখেন, বিএনপিও অনেকগুলো ডাটা সার্ভে করেছে। জামায়াতও অনেকগুলো করেছে। কিন্তু আমি মনে হয় একবার বলেছিলাম, বিএনপি ৫০-১০০ আসনের ওপরে যাবে না। আপনারা তো এখন বাস্তব সিনারিও দেখতে পাচ্ছেন। কোন দিকে তলানিতে যাচ্ছে।’
তিন ব্লকে ভাগ হতে যাচ্ছে রাজনীতি
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আপাতত রাজনৈতিক সিনারিওতে তিনটা ব্লক হতে যাচ্ছে। একটা ইসলামিক ব্লক অলরেডি হয়ে গেছে। আরেকটি হলো বিএনপির নেতৃত্বে হচ্ছে। আমাদের নেতৃত্বে আরেকটি ব্লক হচ্ছে। আমরা যেহেতু বিএনপি না, এজন্য বিএনপির ব্লক যাচ্ছি না। আমরা যেহেতু জামায়াত না, এজন্য জামায়াতের ব্লকেও যাচ্ছি না। আমরা স্বতন্ত্র। এই গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা ইশতেহার দিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম, যেহেতু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ হয়নি। আমাদের সামনে দীর্ঘ লড়াই রয়েছে। ওই জায়গা থেকে গত ১৫ বছরে যে তরুণরা আন্দোলন করেছিল, অনেকেই দল সৃষ্টি করেছিল, তারা অনেকেই সম্মত হয়েছেন এনসিপির ব্যানারে যোগ দেওয়ার জন্য। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা চলমান রেখেছি। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা একসঙ্গে একযোগে কাজ করব। কী প্রক্রিয়াতে এটা হবে, সে বিষয়ে এখনও কথাবার্তা চলছে। যখন আমরা এটা সম্পন্ন করব, তখন আমরা আবার আপনাদের সামনে এসে আপনাদের মারফতে দেশবাসীকে ফাইনাল মেসেজটা জানাব। এটা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গত ১৫ বছরে যতগুলো ব্যানার আছে, সবগুলো ব্যানারকে আমরা একত্রিত করতেছি একটি জায়গায়। তরুণদের একটি বৃহত্তর অ্যালয়েন্স আসতেছে।’