একের পর এক অগ্নিকাণ্ড নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র : আব্দুস সালাম

‘একের পর এক পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম। আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী মনোমোহনী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামত কাঠামো ৩১ দফা বাস্তবায়ন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এ জনসভা আয়োজন করা হয়।
আব্দুস সালাম বলেন, একের পর এক পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো কেবল কাকতালীয় নয়; এগুলো জাতিকে গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলছে। এই ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পিত নাশকতার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। দেশের মানুষ আজ প্রশ্ন তুলছে—এই ঘটনাগুলোর পেছনে কারা এবং কেন হঠাৎ দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের এমন পুনরাবৃত্তি ঘটছে? আমরা বিশ্বাস করি, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে একটি কুচক্রী মহল জনমনে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। কিন্তু জনগণ এখন অনেক সচেতন। জনগণ এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে প্রস্তুত।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে আব্দুস সালাম বলেন, সরকার আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বিরোধিতা করতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। পরপর অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনাগুলো কি শুধুই দুর্ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র—তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
পিআর পদ্ধতির প্রসঙ্গ টেনে আব্দুস সালাম বলেন, দেশের সংবিধানে পিআর পদ্ধতি নেই। এর আগে বাংলাদেশে কখনও এভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। পিআরকে ‘পেয়ার’ করে লাভ নেই, কারণ জনগণ এ বিষয়ে যথেষ্ট অবগত নয়। ভোটাধিকার জনগণের মৌলিক অধিকার—এটিকে কোনো জটিল পদ্ধতিতে সীমাবদ্ধ করা উচিত নয়। আমরা চাই নির্বাচন হোক স্বচ্ছ, অবাধ ও সর্বোচ্চ অংশগ্রহণমূলক।
তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামত কাঠামো প্রসঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, ‘এই ৩১ দফা কেবল রাজনৈতিক ঘোষণা নয়; এটি জাতি পুনর্গঠনের একটি সুপরিকল্পিত নকশা। এতে প্রশাসনিক সংস্কার, বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা, দুর্নীতি দমন, জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি চায় নির্বাচন হোক অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে—যেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে। আমরা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।’
আড়ানী পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মো. তোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ। আড়ানী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাক আহমেদ বিল্টুর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী এশা, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য দেবাশীষ রায় মধু, শিল্পপতি ও সমাজসেবক আলহাজ হাকিম সরকার এবং জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন।
এতে উপস্থিত ছিলেন চারঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম পিকুল, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান সজল, জেলা মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসাদ বেগম মিতালী, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম সরকার, বাঘা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম মলিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম তৌফিক, উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী সেলিনা আক্তার শাপলা এবং পৌর মহিলা দলের সভানেত্রী সোনিয়া সুলতানা।